শ্রীনগর: বিজেপি জমানায় জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করে ন্যাশনাল কনফারেন্স। উপত্যকার প্রধান এই রাজনৈতিক দলের সহ সভাপতি ওমর আবদুল্লা মঙ্গলবার বলেন, যে অধিকার আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা বিজেপির শাসনকালে ফিরে পাওয়া যাবে, এমন আশা আমরা করি না।
২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে কেন্দ্রের মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি আলাদা কেন্দ্র শাসিত এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়। বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে। মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রায় ২০টি আবেদন জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে আগামী ১১ জুলাই ওই সব আবেদন একত্রিত করে মামলার শুনানি হবে। ওই বেঞ্চ আবেদনগুলি শুনবে। আবেদনকারীদের তালিকায় রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের আইএএস অফিসার শাহ ফয়জলের নামও। ওই সময় তিনিও কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। পরে অবশ্য ফয়জল তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানান। তাঁকে সরকার চাকরি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সরকার তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: HC | Recruitment Corruption | চাকরি দেওয়ার নামে তোলাবাজি, অভিযুক্ত হাইকোর্ট কর্মী
এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে ওমর আবদুল্লা বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, যা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা আর কোনওদিন ফিরিয়ে দেব না সরকার। আমরা মনে করি না, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার আবার জম্মু-কাশ্মীরকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেবে কিংবা ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করবে। তবু আমরা আইনি লড়াই ছাড়ব না। আমরা আইনি পথে আমাদের অধিকার ফিরে পেতে চাই। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি পর পর হওয়া উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওমর বলেন, বিজেপি সব সময় বিরোধী দলগুলির মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে দিতে চায়। মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, রাজস্থান, জম্মু-কাশ্মীরে এই খেলা খেলেছে তারা। শাহ ফয়জলের আবেদন প্রত্যাহার নিয়ে ওমর বলেন, তিনি যা চান, তাই করতে পারেন। কেউ তাঁকে আবেদন করতে জোর করেননি। আবার কেউ তাঁকে তা প্রত্যাহার করতেও জোর করছেন না। জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্য প্রসঙ্গে এনসি নেতা বলেন, বিরোধীদের শক্তির আসল পরীক্ষা হবে ভোটে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে ভোট করতেই চায় না। কারণ ভোট হলে তারা দশটি আসনও পাবে না। সেটা ওরা ভালো করেই জানে।