কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনের কালচারাল সেন্টারে রবিবার নীতি আয়োগের সপ্তম পরিচালন পর্ষদের বৈঠক হয়। বিহার এবং তেলঙ্গানা বাদে প্রায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অংশ নেন বৈঠকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের গরহাজিরা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। বিহারে ক্রমশই বাড়ছে বিজেপির সঙ্গে জনতা দল ইউনাইটেডের দূরত্ব। মঙ্গলবারই দলের সব বিধায়ক ও সাংসদকে নিয়ে বৈঠকের ডাক দিয়েছেন নীতীশ কুমার। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, ওই বৈঠকেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি-জেডিইউ দুপক্ষের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। জেডিইউ অনেক কম আসন পেলেও বিজেপি নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেয়। রাজ্য বিজেপির অন্দরে তাই নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ বিহার বিজেপি মেনে নিতে বাধ্য হয়। পরে যত দিন গড়িয়েছে ততই বিহারে শাসক শিবিরের এই দুই সরিকের মধ্য়ে ফাটল বেড়েছে। একাধিক সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি বিজেপির মন্ত্রীরা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগতে ছাড়েননি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিজেপি। মাস কয়েক আগে বিজেপি দফতরে হামলাকে ঘিরেও দলের নেতারা জেডিইউকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করায়।
আরও পড়ুন: SSC Recruitment: আজ এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, জট কি খুলবে?
দুই শরিকের এই দ্বন্দ্বে ঘি ঢেলে দেয় অগ্নিপথ প্রকল্প। এর বিরোধিতায় সারা বিহার জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্রেন অবরোধ, ভাঙচুর সবই চলে অবাধে। বিজেপির অভিযোগ, এর পিছনেও জেডিইউর মদত ছিল।
অন্যদিকে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা আরসিপি সিং-কে রাজ্যসভা নির্বাচনে টিকিট না দেওয়ায় নীতীশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। সম্প্রতি আরসিপি বিজেপি যোগ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নের সময় এনডিএ-র শরিক হিসেবে নীতীশের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তিনি অবশ্য করোনার কারনে অসুস্থতার যুক্তি দেন। রবিবার দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকেও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী গরহাজির থেকেছেন। জল্পনা চলে তা নিয়েও। এর মধ্যেই রবিবার রাতে নীতীশ কুমার ফোন করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিহারে শাসক জোটের প্রধান দুই শরিকের মধ্যে ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। তাহলে কি বিহারে জোট সরকার ভাঙতে চলেছে? এই প্রশ্নে এখন তোলপাড় বিহারের রাজনীতি।