নয়াদিল্লি: একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুয়ায়ী, বিশ্বব্যাপী ৬০ শতাংশ কর্মচারী মনে করেন, তাঁদের চাকরি তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যকে (Mental Health) প্রভাবিত করার সবচেয়ে বড় কারণ। অনেকের মতে, তাঁদের চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে উচ্চ বেতনের চাকরি। পাশপাশি তাঁদের বেতন কাটাও যাবে কি না এ বিষয়ে।
ওই সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, মানুষের এই মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলছে প্রায় ৬৯ শতাংশ। সেই চাপ তাঁদের ডাক্তারদের উপর ৫১ শতাংশ এবং থেরাপিস্ট উপর ৪১ শতাংশ এর চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ৪০ শতাংশ সি-লেভেল নেতারা আগামী এক বছরের মধ্যে এই চাপের কারণে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:Narendra Modi: নিজের নামঙ্কিত স্টেডিয়ামে অজি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদি
দ্য ওয়ার্কফোর্সইনস্টিটিউট অফ ইউকেজি (The Workforce Institute at UKG) ‘মেন্টাল হেলথ অ্যাট ওয়ার্ক’ (The Mental Health at Work) শীর্ষক ‘ম্যানেজারস অ্যান্ড মানি’ (Managers and Money) রিপোর্টে এই এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে ১০টি দেশের বিভিন্ন পদে চাকরি করা ব্যক্তিদের নিয়ে এই সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন কর্মীর ধারণা, কাজের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব তাঁর মনের উপর পড়ছে। অনেকে এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাত কাটাচ্ছেন যে, তাঁদের স্ত্রীর থেকে নিজের আয় কম। একটি কাজের দিনের শেষে ৪৩ শতাংশ মানুষ অধিকাংশ সময় সম্পূর্ণ ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। ৭৮ শতাংশ মানুষ মনে করছেন কর্মক্ষেত্রের অত্যাধিক চাপ তাঁদরে কর্মদক্ষতার ক্ষেত্রে কুপ্রভাব ফেলছে। কাজের চাপ আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলছে। কর্মীরা জানিয়েছেন, দিনকে দিন বৃদ্ধি পাওয়া অত্যাধিক কাজের চাপ তাঁদের পারিবারিক জীবনকেও ব্যতিব্যস্ত করে দিচ্ছে। এই ধরনের মানুষের সংখ্যা ৭১ শতাংশ। একইবাবে কাজের চাপ ৬২ শতাংশ মানুষের অন্যান্য সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ৬৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এই চাপের ফলে তাঁদের স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়ছে।
কর্মক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ মানুষ এই চাপের মুখে থাকলেও সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক কেউ কেউ কোনওদিনই উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের একতা জানাননি। কেউ কেউ বলেছেন, উপরওয়ালারা এসব পরোয়া করেন না। তাঁদের সংখ্যা ১৬ শতাংশ। ১৩ শতাংশের বক্তব্য, আমার উপরওয়ালারা আমার থেকেও বেশি ব্যস্ত। অন্যদিকে ২০ শতাংশের মতে, তাঁরা নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে রাস্তা খুঁজে বের করবেন। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কর্মীদের ৫৭ শতাংশ তাঁদের কাজে খুশি নয় এবং তাঁরা সাফ জানিয়েছেন এক বছরের মধ্যে তাঁরা চাকরি ছেড়ে দেবেন। তার কারণ, এতো কাজের চাপ আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন ৪৬ শতাংশ কর্মী।