নীরজ ঠাকুর, নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে মুখোমুখি হতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী সপ্তাহের সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। তারপরের দিনই প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের নেতৃত্বেই হবে লোকসভার লড়াই: ওমপ্রকাশ
গত বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে দিল্লি সফরের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলের দিকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেই বৈঠক হবে মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন- মমতার ডাকে দিল্লিতে ২৮ জুলাই একজোট বিরোধীরা, আমন্ত্রিত বামেরাও
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষবার দিল্লিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদি-মমতা। তারপরে ভার্চুয়াল বৈঠক হলেও মুখোমুখি কথা হয়নি এই দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের। করোনার প্রতিকূলতা কাটিয়ে প্রায় দুই বছর পরে দিল্লিতে মুখোমুখি হবেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের পরে এবং আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
করোনা আবহে টিকাকরণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা। এবার সেই সমস্যার সমাধান করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেশি সংখ্যক টিকা বাংলায় পাঠানোর দাবি জানাতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের পুরনো বিরোধ রয়েছে। সেই বকেয়া টাকা আদায়ে ফের মমতা বাংলার হয়ে সওয়াল করতে পারেন বলে খবর।
আরও পড়ুন- করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশে বিপুল পরিমান অক্সিজেন পাঠাল ভারতীয় রেল
এ ছাড়াও আরও একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে দুই প্রশাসনিক প্রধানের বিরুদ্ধে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজ্যপাল প্রসঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই সরকারকে আক্রমণ করে টুইট করে থাকেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে আগেও নালিশ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই প্রসঙ্গে ফের উঠতে পারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলচনায়। কারণ বিধানসভা ভোটের পরে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
আরও পড়ুন- সোনার পদক আশা করেছিলেন চানুর পিতামাতা
রাজ্যপাল ছাড়াও রাজ্যের অন্যতম বড় ইস্যু হচ্ছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সময়ে নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করতে। প্রকাশ জনসভায় দাঁড়িয়ে পুলিশ সুপারকে হুমকিও দিয়েছেন শুভেন্দু। যা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরকে ঘিরে বাড়তি কৌতুহল তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলের৷ মমতা দিল্লিতে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ বিরোধীদের সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের দিনও স্থির হয়ে গিয়েছে৷ আগামী ২৮ জুলাই হবে সেই বৈঠক৷ দিল্লির বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিরোধী দলের নেতাদের৷
আরও পড়ুন- ১৯৯১ সালের থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থায় ভারতের অর্থনীতি: মনমোহন সিং
বাদল অধিবেশনের জন্য সব বিরোধী দলের নেতারা এখন দিল্লিতে৷ কাজেই ডাক পেলে মমতার সঙ্গে বৈঠকে যেতে রাজি হবেন তাঁরা৷ কারা কারা সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারে সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে৷ সূত্রের খবর, বৈঠকে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের থাকার জোরাল সম্ভাবনা রয়েছে৷ এছাড়া কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, অকালি দল, সমাজবাদী পার্টির প্রতিনিধিও থাকতে পারেন৷ বাম শিবির সূত্রে খবর, তাদের কাছেও তৃণমূলের তরফে ফোন এসেছে৷ বৈঠকে বাম প্রতিনিধি যাবেন বলে খবর৷