নয়াদিল্লি: পেগাসাস কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা কী ছিল? তা নিয়ে তদন্ত শুরু হোক। এমনই দাবি জালানেক ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। সেই সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা।
ভারতের বহু মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করেছে ইজরায়েলি সংস্থার স্পাইওয়্যার পেগাসাস৷ ফোন হ্যাকিংয়ের তালিকায় রয়েছেন বহু ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক, বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মী। বেশির ভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে৷ গত রবিবার এই বোমা ফাটায় দ্য গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য ওয়্যারের মতো দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম৷
এই খবর সামনে এসেছে এমন দিনে, ঠিক যার পরের দিন সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হতে চলেছে৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে সংসদের দুই কক্ষ। মঙ্গলবার দুই দিনের জন্য লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এ দিন সন্ধ্যায় পেগাসাস নিয়েই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেসের একদল নেতা। সেখানে মল্লিকার্জুন খাড়গে অত্যন্ত কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলেন।
পেগাসাস-র জাল সমগ্র বিশ্ব জুড়েই ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই ফ্রান্স বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে শুরু করেছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, “ফ্রান্স প্রশাসন পেগাসাস নিয়ে তদন্ত করা শুরু করেছে। ভারতের ক্ষেত্রেও তা হওয়া উচিত।” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “এত বড় ঘটনা ঘটে গেল আর প্রধানমন্ত্রী কিছুই জানেন না! পেগাসাস কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হোক।”
অন্যদিকে, পেগাসাস কেলেঙ্কারিতে কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপি জড়িত নয় বলে সোমবার দাবি করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ তিনি বলেন, ডিজিটাল দুনিয়ায় যতক্ষণ না তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ অভিযোগ প্রমাণিত হয় না৷ যে সংবাদ সাধ্যম পেগাসাস কেলেঙ্কারি তথ্য সামনে এনেছে তারাও কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেনি৷
২০১৬ সালে প্রথম পেগাসাসের কথা জানা যায়৷ আরবের এক সমাজকর্মী ফোনে সন্দেহজনক মেসেজ পান৷ প্রথমে মনে করা হয়, আইফোন ব্যবহারকারীদের টার্গেট করছে পেগাসাস৷ কিন্তু এই ভুল ভাঙে পরের বছর৷ বিশেষজ্ঞরা জানান, অ্যানড্রোয়েড ফোনও হ্যাক করতে পারে পেগাসাস৷ ২০১৯ সালে এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে কেস করে ফেসবুক৷ তার পরই জানতে পারা যায়, পেগাসাস ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভারতের বহু সাংবাদিক ও সমাজকর্মীর ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে৷