সিলকিয়ারা (উত্তরকাশী): উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে (Uttarkashi Tunnel Collapse) আটক ৪১ শ্রমিককে উদ্ধারে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মার্কিন যন্ত্র ব্যর্থ। এখন ৬ জন তথাকথিত ‘দক্ষ’ শ্রমিককে দিয়ে আদিম, বিপজ্জনক ও বিতর্কিত ‘মূষিক সুড়ঙ্গ’ বা ব়্যাটহোল মাইনিং (Rathole Mining) পদ্ধতিতে খোঁড়ার কাজ শুরু হচ্ছে। এর জন্য সোমবার ইঁদুরের মতো সরু গর্ত করে খনি খননের কাজে অভিজ্ঞ ৬ জনকে (Rathole Miners) নিয়ে আসা হয়েছে। এখন তারা সুড়ঙ্গে ঢুকে ৩ ফুট চওড়া পাইপের মতো গর্ত করতে করতে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাবে। মধ্য ভারত থেকে এই সুদক্ষ ৬ শ্রমিকই আপাতত ৪১ জনের প্রাণভোমরা।
মূষিক সুড়ঙ্গ শব্দটির উৎপত্তিই হল, ইঁদুর যেভাবে গর্ত খুঁড়ে মাটির তলায় বাসা বাঁধে, তা থেকে। এই পদ্ধতি অত্যন্ত আদিম বা প্রাচীন শুধু নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। মূলত এদেশেই এখনও কয়লা উত্তোলনে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশে এই প্রাণ সংশয়কারী বিপজ্জনক পদ্ধতি উঠে গিয়েছে। খুব সরু গর্ত খুঁড়ে হামাগুড়ি দিয়ে একজনের ঢোকার মতো জায়গা তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গ ধসেও আদানি-যোগ? জবাব দিল কোম্পানি
সংবাদ সংস্থা রয়টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গর্ত খোঁড়ার কাজে আসা রাকেশ রাজপুত নামে খনি খননকারী বলেন, আমাদের মধ্যে তিনজন সুড়ঙ্গের ভিতরে ঢুকব। একজন ড্রিলিংয়ের কাজ করবে। আরেকজন পাথরের চাঙড় সংগ্রহ করবে। এবং আরেকজন সেই টুকরো ও চাঙড় ট্রলিতে তুলে ফেলবে। তিনি জানান, এরকম কাজ আমরা গত ১০ বছর ধরে করে আসছি। এখানে তো দেখছি ঢোকার অনেক জায়গা আছে। যাঁরা ভিতরে আটকে রয়েছেন তাঁরাও শ্রমিক, আমরা সকলেই চাই তাঁদের নিরাপদে বের করে আনতে।
এই ৬ জন ব়্যাট মাইনার্স দড়ি, শাবল, গাঁইতি, কোদাল-বেলচা নিয়ে ভিতরে ঢুকবেন। জীবনরক্ষার যাবতীয় সামগ্রী যেমন পর্যাপ্ত অক্সিজেন, খাবার, জল ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে যাবেন। এটা অত্যন্ত বিপদের কেননা ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত এ ধরনের খনি খননের কাজে ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মেঘালয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত (NGT) এ ধরনের খনন প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ করেছিল। একে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে মন্তব্য করে আদালত। পরিবেশ আদালত আরও বলে, এতে বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়। বায়ু, জল এবং মাটি দূষণ হয় বলেও আদালত জানায়।
অন্য খবর দেখুন