কেরালা হাইকোর্টের দৃষ্টান্তমূলক রায়। একুশ সপ্তাহের গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল আদালত। কেরালা হাইকোর্টে (Kerala High Court) আবেদনকারী ওই মহিলা বিবাহিত হলেও স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট (Medical Termination of Pregnancy Act) অনুযায়ী, কোনও মহিলা তাঁর গর্ভাবস্থা থেকে অব্যাহতি পেতে চাইলে কোনও সমস্যা নেই।
এমটিপি আইন (MTP Act) বলছে, গর্ভাবস্থা চলাকালীন সংশ্লিষ্ট মহিলার বৈবাহিক অবস্থার পরিবর্তন হলে ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়া যায় (বিধবা অথবা ডিভোর্সি মহিলার ক্ষেত্রে)।
আরও পড়ুন:Lata Mangeshkar: লতাজির গান তৈরির গল্প
তবে এক্ষেত্রে আবেদনকারী মহিলার আইনত বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগও দায়ের করেছেন। ওই মহিলার স্বামীও তাঁর সঙ্গে থাকতে চান না। কেরালা হাইকোর্টে সেই পরিস্থিতি বিচার করেই মহিলার গর্ভপাতের পক্ষে রায় দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) একটি রায়ের নজির তুলে ধরে কেরালা হাইকোর্ট বলেছে, গর্ভাবস্থা চলাকালীন কোনও মহিলার বৈবাহিক জীবনের পরিবর্তন বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তনেরই নামান্তর।
ভারতীয় সংবিধানের ২১ ধারা মোতাবেক, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও মহিলার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত। এক্ষেত্রে তাঁকে কোনওভাবেই বাধা দেওয়া যায় না। আদালত তার নির্দেশে আরও জানিয়েছে, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সি আইনে ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় গর্ভপাত করার ক্ষেত্রে স্বামীর সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের যাবতীয় মানসিক চাপ ও যন্ত্রণা সবটাই গর্ভবতী মহিলাকে সহ্য করতে হয়।
কেরালা হাইকোর্টে ২১ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা থেকে অব্যাহতির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন ২১ বছর বয়সি ওই মহিলা। তিনি পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন। স্বামী পেশায় বাস কন্ডাক্টর। ওই মহিলা সেই সময় স্নাতক স্তরের ছাত্রী ছিলেন। আদালতে দাখিল করা হলফনামায় ওই মহিলার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং পণের জন্য চাপ দিতেন। এমনকি, মহিলার স্বামী গর্ভের সন্তানের পিতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকী আর্থিক এবং সামাজিক দায়-দায়িত্ব নিতেও অস্বীকার করেন। সেই কারণেই বাধ্য হয়ে ওই মহিলা গর্ভপবাতের আবেদন করে আদালতের দ্বারস্থ হন।