নয়াদিল্লি: জৈন-হাওয়ালা কাণ্ড সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে আনা সাংবাদিক বিনীত নারায়ণের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির সাউথ অ্যাভিনিউয়ের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রাক্তন সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ (Vineet Narain)। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতার দিল্লি পৌঁছনোর খবর শুনে বিনীত তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: হাওয়ালা কাণ্ডে রাজ্যপালকে আক্রমণ মমতার
জৈন হাওয়ালা মামলা নিয়ে মাসখানেক ধরে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ২৮ জুন মমতা অভিযোগ করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় কুখ্যাত জৈন হাওয়ালা মামলায় অভিযুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দায়ের হয়েছিল। এখনও একটি রিট পিটিশন পড়ে রয়েছে।যদিও তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যপাল দাবি করেন, হাওয়ালা চার্জশিটে তাঁর নাম নেই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই।
আরও পড়ুন: জৈনদের হাওয়ালা ডায়েরিতে রহস্যময় ‘ধনখড়’
সম্প্রতি বিনীত নারায়ণ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দাবি করেন, জৈন হাওয়ালা কেসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। এনিয়ে সমস্ত তথ্য তিনি দিতে তৈরি। মমতার ঠাসা কর্মসূচির মধ্যে বিনীতের প্রায় এক ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কি তবে হাওয়ালা নিয়েই আলোচনা হয়েছে? কী বিষয়ে কথা হয়েছে তা অবশ্য দু’জনের কেউই প্রকাশ্যে আনেননি।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে রাজ্যপালের ট্যুইট, নেটিজেনরা বলছেন ‘পেঁচা’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বৈঠকের হাওয়ালা নিয়ে আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক। বাংলায় রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। মমতা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতে আসার পর সেই সংঘাত আরও বেড়েছে। ফলে রাজ্যপালকে চাপে ফেলার সুযোগ যে হাতছাড়া করতে চাইবে না তৃণমূল, তা বলাই বাহুল্য।
হাওয়ালা কাণ্ড কী?
১৯৯৬ সাল৷ এক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল দেশের রাজনীতি৷ নানা কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত ছিল নরসিমা রাওয়ের সরকার৷ আর তখনই হাওয়ালা কারবারের কথা প্রকাশ্যে আসে৷ তোলপাড় পড়ে যায় দেশে৷ অনেক নেতা, মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যায় হাওয়ালা কারবারে৷ অন্তত ১১৫ জন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে৷ নরসিমা রাও মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রীর নামও জড়িয়ে যায়৷ উঠে এসেছিল বিজেপি নেতা এল কে আদবানির নামও৷
আরও পড়ুন: ‘কর্ম করে যাও, ফলের আশা না করে’ দিল্লি যাওয়ার আগে কী বললেন রাজ্যপাল?
একই ভাবে হাওয়ালা কাণ্ডে নাম জড়ায় জগদীপ ধনখড়ের৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এক সময় জনতা দলের সাংসদ ছিলেন৷ বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ধনখড়৷ কিন্তু রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে জনতা দল বেশিদিন কেন্দ্রে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি৷ জনতা দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ইস্তফা দেন উপ প্রধানমন্ত্রী দেবীলাল৷
আরও পড়ুন: রুম নম্বর ২০২, মঙ্গলবার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের চেয়ারে চানু
দেবীলালের সমর্থনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন জগদীপ ধনখড়ও৷ যদিও পরের দিনই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে মন্ত্রীর পদে ফিরে যান তিনি৷ ধনখড় পরবর্তীকালে যোগ দেন বিজেপিতে৷