আগরতলা: বিপ্লব দেবকে সরিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে মানিক সাহাকে বসিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ বিপ্লবকে নিয়ে দলের বিক্ষুব্ধদের রাগ-ক্ষোভ সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কিন্তু তাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ তো টানাই গেল না, উল্টে নেতা, মন্ত্রী ও বিধায়করা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, এ রোগ সারানো অত সহজ নয়৷
বিপ্লব দেবের পদত্যাগের পরই বিধানসভার পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে মানিক সাহাকে নির্বাচন করা হয়৷ তারপরই প্রকট হয়ে যায় দলের অন্দরের গোষ্ঠীকোন্দলের কদর্য চেহারা৷ পদমর্যাদা ভুলে মন্ত্রীরা একে অপরের দিকে তেড়ে যান৷ বিধায়করা চেয়ার ছুড়ে মারতে উদ্যত হন৷ বিজেপির অফিস জুড়ে শুধুই নেতা-মন্ত্রীদের হল্লা-হল্লি৷ এ দিন বিজেপি নেতা রামপ্রসাদ পালকে বেশি উত্তেজিত দেখায়৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার নাম ঘোষণার প্রতিবাদ করেন৷ ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়তে থাকে৷ অশান্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি৷ এরপরই মারমুখী হয়ে ওঠেন রামপ্রসাদ পাল৷ তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ সেখানে দেখা গিয়েছে, চেয়ার তুলে কারও দিকে তেড়ে যাচ্ছেন তিনি৷ আশেপাশের নেতারা তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছে৷ পরে রামপ্রসাদ কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ কাঁদতে কাঁদতে দলীয় অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যান৷
বিধানসভা ভোটের কয়েকমাস আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত বিজেপির এই নিদারুণ অবস্থা দেখে মজা লুটছে বিরোধীরা৷ ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা একটা সার্কাস পার্টি৷ সব দল ভেঙে ত্রিপুরায় বিজেপি তৈরি হয়েছিল৷ তাতে তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম, নির্দলও ছিল৷ বিজেপির কিচ্ছু ছিল না৷ তৃণমূল কংগ্রেস আসার পর বিজেপিতে থরহরকম্পন শুরু হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বদল করে মুখরক্ষা করতে চাইছে৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন, গোটা মন্ত্রিসভা পরিবর্তন হলেও এই দলটা বাঁচবে না৷ আর কয়েকদিনের মধ্যে বিজেপি ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে৷ সরকারও চলে যাবে৷ বিকল্প হিসেবে মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাইছে৷’