ওয়েবডেস্ক- ইজরায়েল-ইরান (Israel-Iran conflict) যুদ্ধের আঁচ পড়ছে গোটা বিশ্বে। উদিগ্ন ভারত সরকার (India Goverment)। এবার বিদেশে পড়তে যাওয়া ভারতীয় ছাত্রদের ফেরানোর কাজ শুরু করল ভারত সরকার। ভারত আর্মেনিয়া (Armenia) হয়ে ইরান (Iran) থেকে ভারতীয় নাগরিক সহ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ১১০ জন পড়ুয়া আর্মেনিয়া সীমান্তে এসে পৌঁছেছে। যেখানে প্রায় ৬০০ জনকে ইরানের অভ্যন্তরে কোম এবং ইয়াজদের মতো নিরাপদ শহরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
প্রথম দলটিতে ছিল এই ১১০ জন। সোমবার সন্ধ্যায় প্রায় ১১০ জন শিক্ষার্থীর প্রথম দলটি উত্তর-পশ্চিম ইরানের উর্মিয়া থেকে আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে। শীঘ্রই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তেহরানের ভারতীয় দূতাবাস (Indian Embassy Tehran) নিরাপত্তা পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এবং ইরানের অভ্যন্তরে তার নাগরিকদের নিরাপদ চলাচলের সমন্বয় করছে বলে বিদেশ মন্ত্রক ((MEA) জানায়। ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার পরেই এই সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়।
ভারতীয়দের ফেরানোর কাজটি যাতে সহজে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সেই বিষয়ে আর্মেনিয়ার প্রতিপক্ষ আরারাত মিরজোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর । কিছু ক্ষেত্রে, ইরানের অভ্যন্তরে দূতাবাসের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। অন্যান্য সম্ভাব্য অবস্থাগুলিও বিকল্প হিসেবে মাথায় রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ফের এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কোন বিমানে?
তেহরানে ভারতীয় দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে শিরাজ মেডিকেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীদের শহর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করেছে।
শিরাজ এবং ইসফাহানের শিক্ষার্থীদের ইয়াজদে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে, যেখানে প্রায় ৬০০ জনকে ইতিমধ্যেই তেহরান থেকে কোমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ইরানে প্রায় ১০,০০০ ভারতীয় নাগরিক আছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হল শিক্ষার্থী। প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী আছে সেখানে। এদের মধ্যে অনেকেই বিশেষ করে কাশ্মীর থেকে, চিকিৎসা এবং অন্যান্য পেশাদার কোর্সে ভর্তি হন। বিদেশে পড়ুয়াদের পরিবার বিশেষ করে শ্রীনগরে পড়তে যাওয়া ছাত্রদের পরিবার দ্রুত নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।
ইতিমধ্যেই পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে বৃহত্তর কূটনৈতিক পরামর্শের অংশ হিসেবে জয়শঙ্কর সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথেও কথা বলেছেন।
এই সংঘাতের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশ তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। কয়েক ডজন বিমানবন্দর সমস্ত উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে, কমিয়ে দিয়ে বিমানে সংখ্যা। ফলে সমস্যায় পড়েছে যাত্রীরা। চাইলেও বাড়ি ফেরা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ঘোর সংকট তৈরি হয়েছে।
ইজরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র এফি ডেফরিন, দেওয়া এক বিবৃতিতে আশ্বস্ত করেছেন, যে ইরান থেকে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তেল আবিব “পূর্ণ সহযোগিতা” করবে।
দূতাবাসটি ১৫ জুন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বার্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যেখানে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে চলে আসা নিশ্চিত করা হয়েছে। দূতাবাস আরও জানিয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থাটি দেখবে।
ইজরায়েলি বিমান হামলার কারণে ইরানে ইতিমধ্যেই ২২৪ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, অন্যদিকে সোমবার ভোরে ইজরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছে। এদিকে অবস্থা ক্রমশই ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে। তেহরানের অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে হোস্টেল বের হচ্ছে না। তারা কীভাবে নিরাপদে থাকবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন তাদের কাছে।
দেখুন আরও খবর-