নয়াদিল্লি : আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে ছড়িয়ে পড়া মাদক ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোয় গুরুত্ব দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রনেতা । এ বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি স্থায়ী দ্বিপাক্ষিক চ্যানেল তৈরি নিয়েও সহমত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন । এ বার সেই প্রক্রিয়াকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এবং আফগানিস্তান-তালিবান প্রসঙ্গে তাদের অবস্থান আরও মজবুত করতে এক দফা আলোচনা সেরে ফেলল দিল্লি-মস্কো । আফগানিস্তানে তালিবানের মন্ত্রিসভা গঠনের এক দিন পরই রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) নিকোলাই পাত্রুশেভের সঙ্গে বৈঠক করলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল । সন্দেহ নেই, গত মাসে মোদি-পুতিন আলোচনার পরবর্তী ধাপ হিসেবেই এই উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক ।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক অজিত দোভালের, তালিবান নিয়ে আলোচনা
তালিবানে তাদের যে ‘অ্যালার্জি’ নেই, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছে রাশিয়া ও চিন । তবে, তালিবান প্রসঙ্গ দিল্লির যথেষ্ট চিন্তার কারণ । অন্য দিকে, আফগানিস্তানের অস্থিরতার সূত্রে লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের সক্রিয়তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত । আবার, রাশিয়ার সঙ্গেও বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চায় না ভারত । তালিবানের সরকার গঠিত হলে ভারত তাকে স্বীকৃতি দেবে কি না, চর্চা চলছে সেই বিষয়টি নিয়েও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, নয়াদিল্লি প্রকাশ্যে তালিবানের কোনও সমালোচনা করেনি। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি বলেছিলেন, আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে ভারত অবহিত। কূটনৈতিক মহলের মতে, নয়াদিল্লির তরফে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে যে, আফগানিস্তানের নয়া শাসনব্যবস্থায় সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব রাখা হলে, শিশুদের ভবিষ্যৎ ও মহিলাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকলে এবং অন্যান্য দেশে সন্ত্রাস পাচারে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করা না হলে তালিবান প্রশাসনকে মেনে নিতে ভারতের হয়তো সমস্যা থাকবে না ।
আরও পড়ুন: Phd-মাস্টার ডিগ্রির কোনও গুরুত্ব নেই, দাবি তালিবান শিক্ষামন্ত্রীর
মোদি ও পুতিনের দু’জনেই মনে করেন, তালিবান-আফগানিস্তান বিষয়ে একসঙ্গে এগোনো জরুরি। দু’দেশের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র অফিসারদের যোগাযোগ রেখে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে তালিবানের সঙ্গে কোনও প্রকাশ্য আলোচনায় যায়নি ভারত। আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যেটুকু সমন্বয় চলছে, তা উদ্ধারকাজেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু রাশিয়ার মনোভাব অন্য । পুতিন সম্প্রতি বলেছিলেন, তালিবানের ক্ষমতায় ফেরাটা বাস্তব ঘটনা এবং তা নিয়েই আন্তর্জাতিক মহলকে এগোতে হবে। এখানেই দ্বিপাক্ষিক চ্যানেলের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ওই চ্যানেলের মাধ্যমে আপাতত ঘুরপথে আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আদানপ্রদানের পথ খুলতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন । দিল্লিতে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক সেই পথকেই সুগম করল বলে মনে করা হচ্ছে ।