অ্যাবট হিল: কথিত আছে, এই হাসপাতালে ভুত আছে! সন্ধ্যা নামতেই চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে এই হাসপাতাল থেকে। জনহীন এই হাসপাতালে এক সময় তন্ত্রসাধনাও চলত বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। নির্জন এই হাসপাতালের আশেপাশে সন্ধার পর কেউ আসতে সাহস পায় না। ভুল করে কেউ এর আশপাশ থেকে গেলে কেউ যেনো তাঁর পিছু নিয়েছে সেটা বোঝা যেত। গভীর রাতে কে যেনো কান্না করে আবার হটাৎ চিৎকার করে। আওয়াজ পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় এলাকাবাসীর। সাহস করে একসঙ্গে অনেকে সেখানে গিয়েও কিছু দেখতে পায়নি। স্থানীয়দের মতে, এই হাসপাতালের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অলৌকিক কিছু ঘটনা।
চারিদিকে হিমাচলের সৌন্দর্য আর মাঝে ছোট্ট একটি পাহাড়ি গ্রাম অ্যাবট হিল। উত্তরাখণ্ডের চম্পাবত জেলার এই গ্রামটিতে বহু বছর আগে অ্যাবট সাহেব একটি নজরকাড়া বাংলো তৈরি করেন। পরবর্তীতে অ্যাবট সাহেব এই ব্যাংকটিকে একটি সেবা প্রতিষ্ঠানে দান করেন। অ্যাবট সাহেবের মৃত্যুর পর ১৯২০ সালে সেখানে একটি হাসপাতাল তৈরি করে সেই সেবা প্রতিষ্ঠান। দ্রুত চিকিৎসা পেতে সেখানে ভির করতেন এলাকাবাসী। সেই চিকিৎসা কেন্দ্রে মরিস নামের এক চিকিৎসক ছিলেন। তিনি হাসপাতালে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই সেখানে অলৌকিক ঘটনা ঘটতে থাকে। মরিস যে কোনও রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে বলে দিতেন রোগীর মৃত্যুর দিনক্ষণ। তিনি যেই দিনক্ষণ নির্ধারিত করতেন, ঠিক সেই দিনক্ষণেই রোগী মারা যেতেন। ব্যাপারটা জানাজানি হতেই হাসপাতালে ভিড় জমতে থাকে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের একাংশ
সেই হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হলে মরিস সেই রোগীর সঙ্গে অন্য কোনও ওয়ার্ডে যেতেন। সেই ওয়ার্ডের নাম ছিল মুক্তি কোঠি বা মুক্তির ঘর। সেই ঘরেই তিনি রোগীর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলে তাঁকে বলে দিতেন তাঁর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার দিনক্ষণ। তার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই রোগী মারা যেতেন।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ওই বিশেষ ঘরে রোগীদের উপর নানা রকমের পরীক্ষা করতেন মরিস। আবার অনেকে দাবি করেন, মরিস তন্ত্র সাধনা করতেন। তিনি সেই বিশেষ ঘরে রোগীদের সঙ্গে ভয়াবহ তন্ত্রসাধনা করতেন। সেই সাধনার ফলেই রোগীদের মৃত্যু হত। পরবর্তীতে মরিস নিজেকে ভগবান হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। আবার কিছু স্থানীয়দের দাবি, মরিস ভুয়ো চিকিৎসক ছিলেন। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। তাঁর সম্পর্কে এমন ধারণা তৈরি করার জন্যই আগের থেকে ছক কষেছিলেন মরিস।
মরিস মারা গেলে অ্যাবট সাহেবের সেই হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে পাহাড়ি জঙ্গল গ্রাস করে হাসপাতালটিকে। তারপর থেকেই এলাকাবাসী শুনতে পায় ভূতের তাণ্ডব। কখনও কান্না আবার কখনও কান ফাটানো চিৎকার। মরিসের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছিলেন, সন্ধ্যা হলেই তাঁদের প্রেতাত্মা সেখানে তাণ্ডব চালায়। তাই সন্ধার নির্দিষ্ট সময়ের পর হাসপাতাল চত্বর এড়িয়ে চলে সবাই, এমনটাই দাবি গ্রামবাসীর।
আরও অন্য খবর দেখুন