কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: রাজনীতির (Assembly Polls 2022) কী মহিমা! তাই প্রয়োজনে কখনও গান্ধীকে (Mahatma Gandhi) স্মরণ তো কখনও গডসে (Godse) কে। সে সবকে ছাপিয়ে তাঁকে স্মরণ করার পালা যিনি গডসে-র সঙ্গে লড়াই করেছিলেন।
১১ মে ২০১৬, ওড়িশার রাজকনিকা ব্লকের বাসিন্দা তথা ৮৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা মন্দোদরিকে ভুবনেশ্বরে আচমকা ভুবনেশ্বরে নিয়ে আসা হয়। যা তাঁর বসতবাড়ি থেকে ১৩৫ কিমি দূরে। সরাসরি তাঁকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সামনে হাজির করা হয়। তখনই বৃদ্ধার হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। মন্দোদরি এর আগে এতবড় অঙ্কের টাকা দেখেননি। তিনি জানান, চেক দেওয়ার সময় তাঁকে বলা হয় “রঘু নায়কের বিধবা স্ত্রী” হওয়ার জন্যই এই টাকা দেওয়া হয়েছে।
মন্দোদরি এবং তাঁর দুই মেয়ে ওড়িশার রাজকণিকায় থাকেন। মেয়েদের উপর নির্ভরশীল মান্দোদরি। তাঁরা সকলে আকস্মিকভাবে আশ্চর্য হয়ে পড়েছেন। শুধু তাঁরা নন, স্থানীয়রাও আরও অযৌক্তিক বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কেন্দ্রপাড়া জেলার রাজকণিকায় সম্ভাব্য সফরে। পরের বছরে এখানেই পঞ্চায়েত নির্বাচন আছে।
এবার আসা যাক রঘু নায়েকের কথায়। দিল্লির বিড়লা হাউসের লনে রঘু নায়কের গল্প শুরু হয়েছিল এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে শেষ হয়েছিল। দিনটি ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নাথুরাম গডসে বিড়লা হাউসের লনে মহাত্মা গান্ধীকে গুলি করেছিল। মহাত্মাকে গুলি করার কিছু মুহূর্তের মধ্যে বিড়লা হাউস লনের তৎকালীন ৩৭ বছর বয়সী মালী গডসেকে ধরে ফেলে। মাটি খুড়তে ব্যবহৃত খুরপি দিয়ে গডসেকে আঘাত করতে সক্ষমও হন। এই মামলায় এক মাত্র সাক্ষীও ছিলেন লেনর মালী তথা রঘু নায়েক। তাঁর সাক্ষীতেই বিচারক আত্মা চরণ গডসেকে মৃত্যুদণ্ড সাজা ঘোষণা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: Manipur Polls: মণিপুরে ৬০টি আসনে লড়বে বিজেপি, প্রার্থী তালিকা প্রকাশ
নায়ককে প্রথম “নায়ক” হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল ১৯৫২ সালে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ তাঁকে “গডসের সঙ্গে লড়াই করার” জন্য প্রশংসা করে একটি চিঠি সহ ৫০০ টাকা নগদ পুরস্কার দিয়েছিলেন। ১৯৬৮ সালে অবসর নেওয়া পর্যন্ত রঘু নায়েক বিড়লা হাউসে মালী হিসাবে কাজ চালিয়ে যান। কিন্তু ১৯৮৩ সালে মারা যাওয়ার সময় অস্পষ্টতা এবং কষ্ট উভয়ই তাঁকে গ্রাস করেছিল।
তারপর গত কয়েক দশক রঘু নায়েকের কথা কারও মনেছিল না। কিন্তু সাত মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক মন্দোদরি জন্য ৫ লক্ষ টাকা সাহায্যের ঘোষণা করে নায়েকের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন।
তার পরপরই নায়কের মেয়ে তাঁর মা’কে নিয়ে ভুবনেশ্বরে উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নায়েকের মেয়ে বাসন্তী মল্লিক বলেন, “গ্রামের তহসিলদার আমাদের ভুবনেশ্বরে যেতে বলেছিলেন। আমার কাছে যা কিছু কাগজপত্র ছিল আমি তাড়াহুড়ো করে মাকে নিয়ে ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। এর বাইরে কিছু জানি না।”