রায়পুর: দেশ জুড়ে চলছে গণেশ চতুর্থীর উৎসব। শুক্রবার যা নিয়ে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে সর্বত্রই। করোনার কারণে উৎসব উদযাপনে রাশ টানা হলেও সোশাল মিডিয়ায় অনেক ছবি দেখা গিয়েছে সদ্ধিদাতার উপাসনার। এরই মাঝে ১১০০ বছরের পুরনো গণেশ মূর্তি এবং তার ইতিহাস তুলে এনেছেন ভারতের বন দফতরের আধিকারিক পারভিন কাসওয়ান।
ছত্তিসগড়ের দান্তেওয়াড়া জেলার জঙ্গল ঘেরা পাহাড়ের উপরে অধিষ্ঠিত রয়েছেন সিদ্ধিদাতা গণেশ। মহামায়ার এই পুত্র দান্তেওয়াড়ার ঢোলকার পাহাড়ের চুড়ায় বসে রয়েছেন ১১০০ বছর ধরে। ওই মূর্তি নির্মাণ এবং পাহাড়ের উপরে তা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল নাগবংশী রাজবংশের রাজত্বকালে। এই সুদীর্ঘ সময় ধরে মাটি থেকে তিন হাজার ফুট উচ্চতায় নিজের মতো অধিষ্ঠান করে রয়েছেন গণেশ।
স্থানীয় উপজাতিরা এখনও ওই প্রতিমাকে নিজেদের ত্রাণকর্তা বলে মনে করেছেন এবং নিয়মিত উপাসনা করেন। প্রাচীন কালে ঢোলকা এলাকায় মহিলারাই পুজো করতেন পুরোহিত হিসেবে। স্থানীয় উপজাতিরা নিজেদের সেই মহিলা পুরোহিতদের বংশধর বলে মনে করে থাকেন।
আরও পড়ুন- ‘আমিও কাশ্মীরি পণ্ডিত’, জম্মুতে বললেন রাহুল, ‘সুযোগসন্ধানী’ বলে খোঁচা বিজেপির
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, পাহাড়টি ভগবান গণেশ এবং দ্রষ্টা পরশুরামের মধ্যে যুদ্ধের স্থান। যুদ্ধের মাঝে গণেশের দাঁত ভেঙে এখানে পড়ে যায়। সেই পৌরানিক যুদ্ধের স্মৃতিতে শ্রী গণেশের মূর্তি স্থাপন করেছিলেন নাগবংশী রাজারা। মূর্তির উচ্চতা আড়াই ফুট। প্রাচীন ওই মূর্তিটি ভারতের প্রাচীন শৈল্পিক সৌন্দর্যের একটা বড় উদাহরণ। যেখানে দেখা যায় একহাতে নিজের ভাঙা দাঁত নিয়ে রয়েছেন শ্রী গণেশ। আর অন্য হাতে রয়েছে অস্ত্র। নিজেদের রাজবংশের চিহ্ন ধরে রাখতে মূর্তির পেটে একটি সাপ এঁকেছিল নাগবংশীরা। যা এখনও বিদ্যমান।
আরও পড়ুন- ব্রাহ্মণদের সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, জামিন পেলেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের বাবা
ওই গণেশ মূর্তিটি শতাব্দী ধরে পূজিত হয়ে আসছে এবং পাহাড়টিকে পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবেও হিসেবেও ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। প্রাচীন মূর্তিটি দেখার জন্য অনেক লোক মূর্তির কাছে ভিড় করে। রাজ্য সরকার এই স্থানটিকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দুই কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- আদালত-রাজ্য সরকার সহমতের ভিত্তিতে চাকরি পাচ্ছেন বহু প্রাথমিক শিক্ষক
২০১৭ সালে আচমকা অদৃশ্য হয়ে যায় ওই সহস্রাব্দ প্রাচীন মূর্তি। পরে দুই টুকরো অবস্থায় সেই প্রাচীন গণেশ মূর্তি উদ্ধার হয় পাহাড়ের নিচ থেকে। পরে তা উদ্ধার করে জুড়ে ফের প্রতিষ্ঠা করা হয় ওই পাহাড়ের চুড়ায়। এই ঘটনার পিছনে মাওবাদীদের হাত ছিল ছিল বলে মনে করে পুলিশ।