নয়াদিল্লি: পেগাসাস কাণ্ডে সপ্তাহব্যাপী অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সংসদে। গত ১৯ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশ শুরু হলেও একদিনও কোনও বিল বা প্রশ্নত্তোর পর্ব হয়নি। বিরোধীদের লাগাতার বিক্ষোভ-প্রতিবাদে সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশন মুলতুবি রাখতে বাধ্য হন অধ্যক্ষ। সোমবার দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন করে অধিবেশন শুরু হলেও একই ইস্যুতে উত্তাল হয় সংসদ কক্ষ। এরফলে সংসদের ভিতরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। তাই সংসদের এই অচলাবস্থা কাটাতে তড়িঘড়ি বিরোধীদের দ্বারস্থ হল সরকার৷ সোমবার সংসদ বিষায়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী কংগ্রেস নেতা মণীশ তেওয়ারি ও শরদ পাওয়ারের ন্যাশনাল কংগ্রেসের সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে দেখা করেন। অন্যদিকে, সংসদের অচলাবস্থা কাটাতে ওম বিড়লার সঙ্গে কথা বলেন অমিত শা।
আরও পড়ুন-সংসদে বিরোধীদের ধারাবাহিক বিক্ষোভ, অচলাবস্থা কাটাতে ওম বিড়লার সঙ্গে কথা অমিত শাহের
১৮ জুলাই পেগাসাস কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। আর ১৯ জুলাই লোকসভার বাদল অধিবেশন শুরু হয়। তারপর থেকেই পেগাসাস নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের আরও বেশ কয়েটি দেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কারণ, বিশ্বের ১৭টি সংবাদ সংস্থা তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তথ্যভান্ডার প্রকাশ্যে এনেছে। এই নম্বর গুলিতে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফোনে কী কথাবার্তা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে কী আদান-প্রদান হয়েছে, ফোনে কী তথ্য, নথি, ছবি রয়েছে সেটাও দেখা হয়েছে। অথচ যাঁর মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে, তিনি জানতেই পারেননি।
আরও পড়ুন- হিংসার প্রতিবাদে হেলমেট পরে বিধানসভায় বিধায়করা
দেশীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ওয়ারে’র রিপোর্টে প্রকাশ, এই পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ভারতের সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মী, বিচারপতিদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটা সরকারই করেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু, পেগাসাস স্পাইওয়্যার সরকার কিনেছিল কি না তা স্পষ্ট করছে না। অথচ, পেগাসাস স্পাইওয়্যার নির্মাণ সংস্থা এনএসও-র বক্তব্য, শুধুমাত্র সন্ত্রাসী এবং শিশু যৌন নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী বা মানব পাচারকারীদের মত গুরুতর অপরাধীদের নজরদারি করার শর্তেই নির্বাচিত সরকারকে এই সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়।