ওয়েব ডেস্ক: পহেলগামের জঙ্গি হামলার (Pahelgam Terror Attack) রক্তে ধুয়ে গিয়েছিল সিঁথির সিঁদুর। বিয়ের মাত্র সাতদিনের মাথায় স্বামীকে হারিয়েছিলেন নৌসেনা লেফটেনেন্ট বিনয় নেহেরওয়াল স্ত্রী হিমাংশী। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল বিক্রমের। গোটা দেশে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। ভেঙে পড়েছিলেন হিমাংশীও। হাতের মেহেন্দির রঙ ফিকে হওয়ার আগেই মুছতে হয়েছিল সিঁথির সিঁদুর। অসহায় হিমাংশীর মতো আরও অনেকের সিঁদুরের বদলা নিতেই ভারতের তরফ থেকে প্রত্যাঘাত নেমে আসে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলির উপর। এই আবহেই উঠে আসে বেশ কয়েকটি নাম।
প্রথমজন কর্তব্যে অবিচল ভারতের বিদেশসচিব ও আইএসএফ অফিসার কাশ্মীরি পন্ডিত বিক্রম মিস্রী। দ্বিতীয়জন, প্রতি মুহূর্তে পাকিস্তানকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার বিবরণ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। অপারেশন সিঁদুরের প্রতীক হয়ে উঠেছেন তাঁরা। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় হিমাংশী, সোফিয়া ও বিনয়দের নিয়ে উঠেছে আক্রমণ, কটাক্ষ ও ট্রোলের বন্যা। আরও একবার প্রমাণিত, সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রোল সংস্কৃতি নামতে নামতে কোন তলানিতে এসে ঠেকেছে।
আরও পড়ুন: বন্দি বিনিময়, পূর্ণম ফিরলেন দেশে, রাজস্থানে আটক পাক রেঞ্জার্সকে মুক্তি দিল ভারত
পহেলাগামের জঙ্গি হামলায় স্বামীকে হারিয়ে হিমাংশী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে ছিলেন, তিনি তাঁর স্বামীদের হত্যাকারীর শাস্তি চান। কিন্তু মুসলিমদের প্রতি সামগ্রিক বিদ্বেষ চান না। ব্যস! কেন স্বামীকে হারিয়েও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক কথা বললেন না হিমাংশী? সোশ্যাল মিডিয়ায় জেএনইউয়ের এই প্রাক্তন ছাত্রীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নেট নাগরিকদের একাংশ। তাঁর চরিত্র হনন করতেও পিছপা হননি তারা।
শুধু হিমাংশী নয়। ট্রোলবাহিনী টার্গেট করতে ছাড়েনি ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। ও তাঁর পরিবারকেও। এমনকী বাদ যায়নি তাঁর পরিবারও। শনিবার যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেন বিনয় মিস্রী। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর উপর ধেয়ে আসে কুরুচিকর আক্রমণ। তাঁর পারিবারিক ছবির নীচে লেখা হয়, ‘দেশদ্রোহী, বিশ্বাসঘাতক’। এমনকী বিক্রম মিস্রীর মেয়ের নম্বর ফাঁস করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শেষ অবধি দেশের বিদেশমন্ত্রকের সর্বোচ্চ কর্তা তাঁর সোশ্যাল হ্যান্ডেল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।
অপারেশন সিঁদুরের আবহে প্রতিটি বৈঠকে তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ভ্যোমিকা ও সিংহকে। নেটনাগরিকদের কটাক্ষ থেকে বাদ পড়েননি তাঁরাও। ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি মন্ত্রীর মন্তব্যকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক। ভারতীয় প্রত্যাঘাত নিয়ে বলতে গিয়ে ভারতীয় সেনার এক আধিকারিককে কার্যত জঙ্গিদের বোন বলে মন্তব্য করেছেন।
মতের অমিল হলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য কেন? এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বহুবার। এবার তা আরও জোরালো হল।
দেখুন আরও খবর: