ওয়েবডেস্ক- কফিনের মধ্যে ছেলে। সামনে দাঁড়িয়ে ৮৮ বছরের বৃদ্ধ। চোখ ভেজা, কাঁপছে শীর্ণ হাত, শান্ত চাহনি। অভিশপ্ত বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane crash) পাইলট সুমিত সাভারওয়ালকে শেষ বিদায় জানালেন তাঁর বাবা পুষ্কররাজ সাভারওয়াল ( Pushkarraj Sabharwal)
আহমেদাবাদ বিমান বিপর্যয়। ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু। ভাগ্যক্রমে এই অভিশপ্ত বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন এক যাত্রী। বিমানে সমস্ত ক্রু মেম্বার থেকে পাইলট, বিমান সেবিকাদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন পাইলট সুমিত সাভারওয়াল (Captain Sumit Sabharwal) । মঙ্গলবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল।
গত ১২ জুন অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়া-১৭১ বিমানে পাইলট ছিলেন সুমিত সাভারওয়াল। মঙ্গলবার মুম্বইতে সুমিতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ছেলের শেষকৃত্যে ভেঙে পড়েন ৮৮ বছরের বৃদ্ধ বাবা। আজ সুমিতের বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়। মুম্বইয়ের পাওয়াই এলাকায় ছিল সুমিতে বাড়ি। সেখানে তাঁকে শেষ বিদায় জানাতে শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষ। ছেলের দেহের সামনেই দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ ৮৮ বছরের মানুষটি।
আরও পড়ুন- ফের এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কোন বিমানে?
চোখ ভেজা, কাঁপছে হাত, একদম শান্ত, স্থীর। সোমবার এই পাইলটের দেহ তাঁর পরিবারে হাতে হস্তান্তর করা হয়। ক্যাপ্টেন সাভারওয়াল এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ফ্লাইট AI-171-এর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। MAYDAY কল করার পরেই বিমানটি বিজে মেডিক্যাল হস্টেলের মাথায় ভেঙে পড়ে। ডিজিসিএ জানিয়েছে এই কলের পর ককপিট থেকে আর কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। দুর্ঘটনায় সাভারওয়াল এবং তার সহ-পাইলট, ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
#WATCH | #AirIndiaPlaneCrash | Maharashtra: Father of Captain Sumeet Sabharwal, Pushkaraj pays emotional tribute to his son outside their residence in Powai, Mumbai.
Captain Sabharwal was flying the ill-fated London-bound Air India flight that crashed soon after take off in… pic.twitter.com/NStRiMM6BY
— ANI (@ANI) June 17, 2025
সোমবার সাভারওয়ালের দেহ বাড়িতে আনার সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা পুষ্কররাজ। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অবসর নিয়ে বৃদ্ধ বাবার পাশে থাকার ইচ্ছে ছিল সাভারওয়ালের। সেই স্বপ্ন, বিমানের মতো, ভেঙে পড়ল। একজন আত্মীয় জানান, সাভারওয়ালের সব সময় বলত যাঁরা আমাদের জন্য সব কিছু করেছে, তাঁদের জন্য কিছু করার সময় এসেছে। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে সেই সুযোগ দিল না।
সাভারওয়ালই এটিসিকে মেডে কল-এর সতর্কতা জারি করেছিলেন।
৬০ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন যার ৮,২০০ ঘন্টারও বেশি বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। উড়ানের মাত্র ৫০ সেকেন্ড পরেই বিমানটি আগুনের গোলায় পরিণত হয়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে, সাভারওয়াল এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে একটি চূড়ান্ত দুর্দশার বার্তা পাঠিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, “মেডে, মেডে, মেডে… কোনও শক্তি নেই, কোনও ধাক্কা নেই, নিচে নেমে যাচ্ছি।” কিছুক্ষণ পরেই, বিমানটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, ডাক্তারদের হস্টেলে গিয়ে পড়ে।
সাভারওয়াললে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক দিলীপ ল্যান্ডে এবং শিল্পপতি নিরঞ্জন হিরানন্দানি প্রমুখ।
দেখুন আরও খবর-