নয়াদিল্লি: আহমেদাবাদে বৃহস্পতিবার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র একজন প্রাণে বেঁচেছেন। ওই ব্যক্তির নাম রমেশ বিশ্বাসকুমার (৪০)। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি বিমানের জরুরি নির্গমন দরজার কাছে বসে ছিলেন এবং সেখান থেকে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
হাসপাতালের শয্যা থেকে কথা বলতে গিয়ে রমেশ জানিয়েছেন, তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে ভারত সফর শেষে ব্রিটেনে ফিরছিলেন। রমেশের কথায়, “আমি উঠে দেখি, আমার চারপাশে শুধু মৃতদেহ। আমি ভয় পেয়ে যাই। উঠে দাঁড়িয়ে দৌড়ে পালাই। চারদিকে বিমানের টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। হঠাৎ কেউ আমাকে ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তোলে এবং হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
আরও পড়ুন: ডিএনএ পরীক্ষার আসল মৃতের সংখ্যা জানা যাবে: অমিত শাহ
তবে বিমান দুর্ঘটনার আগেই তিনি ঝাঁপ দিয়েছিলেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার ফুটেজে দেখা যায়, একটি রক্তাক্ত সাদা টি-শার্ট এবং গাঢ় রঙের প্যান্ট পরা এক ব্যক্তি রাস্তায় লিম্প করে হাঁটছেন এবং এক চিকিৎসাকর্মী তাঁকে সাহায্য করছেন। ওই ব্যক্তির মুখে কাটা দাগ ও দাঁড়ি ছিল, যার সঙ্গে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হাসপাতালের বিছানায় থাকা রমেশ বিশ্বাসকুমারের ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে। ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে আরও দেখা যায় রমেশকে উদ্ধারকারী দলের একজন জিজ্ঞেস করছেন, “বাকি যাত্রীরা কোথায়?” উত্তরে তিনি বলেন, “ওরা সব ভেতরে।”
উল্লেখ্য, রমেশ বিশ্বাসকুমারের বোর্ডিং পাসে লেখা ছিল তিনি ১১এ নম্বর আসনে বসেছিলেন। ওই ফ্লাইটটি গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। তিনি সংবাদপত্রটিকে জানান, তার ভাই অজয় বিমানে অন্য এক সারিতে বসেছিলেন, এবং ভাইকে খুঁজে বের করার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।
আহমেদাবাদের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, “তিনি জরুরি নির্গমন দরজার কাছেই ছিলেন এবং সেখান দিয়ে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে বেঁচেছেন।”
ব্রিটেনে অবস্থানরত বিশ্বাসকুমারের এক আত্মীয়, যিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি, তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান রমেশ বেঁচে আছেন এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। লেস্টার, মধ্য ইংল্যান্ডে বসবাসকারী রমেশের চাচাতো ভাই অজয় ভালগি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, রমেশ ফোনে শুধু নিশ্চিত করেছেন যে তিনি ভালো আছেন। তাঁর কথায়, “তিনি শুধু বলেছিলেন তিনি ঠিক আছেন, আর কিছু বলেননি,”। তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমরা এখনও রমেশের ভাইয়ের সম্পর্কে কিছুই জানতে পারিনি। আমরা ভালো নেই। সবাই ভেঙে পড়েছি। রমেশ বিশ্বাসকুমার বিবাহিত এবং তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির একটি অংশ স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে। জানা গিয়েছে, ওই সময় দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন হোস্টেলের আবাসিকরা। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯৪। তবে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের।
দেখুন আরও খবর: