ওয়েব ডেস্ক: নাবালিকা বিয়ের (Minor Girl Marriage) ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আইন ও ফৌজদারি আইনের মধ্যে প্রকট দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। বিচারপতি অরুণ মঙ্গা শুক্রবার এক মামলার শুনানিতে বলেন, “এখনই কি অভিন্ন দেওয়ানী বিধির (Uniform Civil Code) দিকে এগোনোর সময় নয়?” হাইকোর্ট জানায়, ইসলামী আইন অনুযায়ী বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনো মাত্রই নাবালিকার বিয়ে বৈধ বলে গণ্য হয়। অথচ ভারতীয় ফৌজদারি আইন অনুযায়ী, নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা অপরাধ। এমনকি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) ও পকসো আইন (POCSO) অনুযায়ী স্বামীকেও অভিযুক্ত করা যায়। ফলে একই ঘটনার ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন আইন একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় দাঁড়ায়।
বিচারপতির মতে, ধর্মীয় স্বাধীনতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। তবে সেই স্বাধীনতার আড়ালে এমন বৈপরীত্য চলতে পারে না, যেখানে একজন ব্যক্তিকে একইসঙ্গে বৈধ ও অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। তিনি আরও বলেন, বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে সকল সম্প্রদায়ের জন্য নাবালক-নাবালিকা বিয়ে নিষিদ্ধ করা উচিত, যাতে আইনের জটিলতা না বাড়ে।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে ইঁদুরের উৎপাত! ক্ষুব্ধ হয়ে কী বলল আদালত?
হামিদ রাজা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকাকে বিয়ে করার অভিযোগ ওঠে। মেয়েটি জানায়, তার সত বাবা দীর্ঘদিন ধর্ষণ করেছে এবং সে একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। পরবর্তীতে সত বাবার অপরাধ আড়াল করার জন্যই হামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। মেয়েটি আদালতে বিবাহ সনদ পেশ করে দাবি করে, বিয়ের সময় সে সাবালিকা ছিল। তদন্তে উঠে আসে, ইসলামী আইন অনুসারে তাঁদের বিয়ে বৈধ। সেই প্রেক্ষিতে আদালত হামিদকে জামিন দেয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অরুণ মঙ্গা স্পষ্ট মত দেন— ব্যক্তিগত আইন ও ফৌজদারি আইনের পরস্পরবিরোধী অবস্থান দূর করার জন্য আইনসভাকে ধীরে হলেও অভিন্ন দেওয়ানী বিধির পথে অগ্রসর হতে হবে। নইলে একই ধরনের মামলায় বিচারব্যবস্থা জটিলতায় পড়তে থাকবে।
দেখুন আরও খবর: