ওয়েব ডেস্ক: গণতন্ত্রের মুখোশে সন্ত্রাসে মদত দেয় পাকিস্তান (Pakistan)। সেই মুখোশ খুলতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহুদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে ভারত (India)। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) সদস্য সহ নানা দেশের সরকারকে পাকিস্তানের স্বরূপ সম্পর্কে অবহিত করবে এই প্রতিনিধি দলগুলো। অথচ এ নিয়ে এখন দেশের সংসদই (Parliament) অন্ধকারে।
সীমান্তে পাকিস্তানের সন্ত্রাস, ভারতের অপারেশন সিঁদুরের লক্ষ্য, সিন্ধু জলচুক্তি ইত্যাদি নিয়ে বিশ্বের দরবারে স্বর জোরালো করবে ভারত, একথা জানিয়েছিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। কিন্তু প্রতিনিধি দলে থাকা বিরোধী দলের সদস্যেরা বলছেন, এ নিয়ে দেশের অভ্যন্তরেও ‘জবাবদিহি’ করা উচিত মোদি সরকারের (Modi Government)।
১৯৬২ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় সংসদে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলার পর তা নিয়ে শীতকালীন অধিবেশন বসেছিল। মুম্বই হামলার কয়েকদিন পরেই ছিল শীতকালীন অধিবেশন। লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল পিডিটি আচারী বলছেন, কী ঘটেছিল এবং ভারত তারপর কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা সংসদে জানানো উচিত। তবে এটা সরকারের সিদ্ধান্ত, জানাতেই হবে এমন কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।
আচারী বলেন, “১৯৭১ সালে সংসদ অধিবেশন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছিল এবং যুদ্ধক্ষেত্রের অগ্রগতি সহ সবকিছুই সংসদে প্রকাশ করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে, বিরোধী দল দাবি করেছিল যে সংসদের একটি গোপন অধিবেশন হওয়া উচিত। কিন্তু জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন যে এ নিয়ে লুকানোর কিছু নেই, অধিবেশন হবে খোলাখুলি এবং সরকার সংসদের সামনে সবকিছু উপস্থাপন করবে।”
আরও পড়ুন: পরমাণু ভয় দেখিয়ে ভারতকে দমানো যাবে না, হুঙ্কার মোদির
প্রতিনিধি দল নিয়েও অসচ্ছতা রয়েছে। এ নিয়ে বিরোধী দলকে কিছু জানানো হয়নি, কোনও আলোচনাও করা হয়নি বলে দাবি করেছেন সিপিআই সাধারণ সচিব ডি রাজা। তিনি বলেন, এই প্রতিনিধি দলগুলির কার্যভার সম্পর্কে কোনও স্পষ্টতা নেই। ভারতের নিজস্ব সংসদ এবং জনগণ অন্ধকারে অথচ বিদেশি সরকারগুলিকে অবগত করা হবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
যুদ্ধবিরতি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা সম্পর্কে যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে তা সরকারের পরিষ্কার করা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাজা। তিনি বলেন, “বিশ্বের কাছে পৌঁছনোর আগে, সরকারকে প্রথমে তার নিজস্ব জনগণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে সম্মান করতে হবে। ভারত স্বচ্ছতা, ঐক্য এবং মর্যাদার যোগ্য – অহংকার, অস্বচ্ছতা এবং চেপে রাখার নয়।”
এদিকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন, প্রকৃত প্রশ্নগুলো থেকে নজর ঘোরানোর জন্য নরেন্দ্র মোদি এই প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রমেশ বলেন, ১৯৫০ সাল থেকে ভারতের প্রতিনিধি দল বিদেশে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেসব বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন গোটা বিশ্বে যখন তাঁর ভাবমূর্তি তছনছ হয়ে গিয়েছে, হঠাৎ করেই তাঁর প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা মনে হল।
রমেশ আরও জানিয়েছে, ২০০৮ সালে হামলার পর হামলাকারী জঙ্গিদের খতম করা হয়েছিল এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এখন মোদি সরকার দলিল বানাচ্ছে, কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে, অথচ জঙ্গিদের নাগালে পাওয়া যায়নি। তাদের গ্রেফতার করতেই হবে, জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হবে।
দেখুন অন্য খবর: