করোনার দ্বিতীয় ঢেউযের ধাক্কা সামলে অনেকটাই সুস্থতার পথে দেশ। বেশকিছু জায়গায় এরইমধ্যে শুরু হয়েছে আনলক প্রক্রিয়া। সংক্রমণ ও মৃত্যুর দৈনিক সংখ্যা কমলেও নতুন নতুন তথ্য নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। নিকাশি নালার জলে করোনার জীবাণুর উপস্থিতির পর এবার নদীর জলের নমুনা পরীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। গুজরাটের সবরমতী নদীর জলে মিলেছে করোনার জীবাণু। এমনকি চান্দোলা, কাঁকরিয়ার মতো জলাশয়েও মিলেছে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব। তবে নদীর জলে সংক্রমণের অস্তিত্ব যে কতটা ভয়ানক তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। গুজরাত ও আহমেদাবাদের মাঝামাঝি সবরমতী নদী থেকে নেওয়া জলের যতগুলি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাঁর ২৫ শতাংশের মধ্যে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। এর আগে গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত নিকাশি নালায় সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল।
আরও পড়ুন যোগীর প্রশংসায় ট্যুইট মোদীর
এবার প্রাকৃতিক মিঠে জলের উৎসে করোনার জীবাণু মেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। আইআইটির অধ্যাপক মণীশ কুমার জানিয়েছেন, ২০১৯-এর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সপ্তাহে এক বার করে সবরমতী এবং চান্দোলা ও কাঁকরিয়া হ্রদ থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবরমতী থেকে ৬৯৪ এবং বাকি দুই সরোবর থেকে ৫৪৯ ও ৪০২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাঁর ২৫ শতাংশই বলা যায় করোনা পজিটিভ। এই রিপোর্ট আসতেই দেশের বাকি নদী ও বড় বড় জলাশয়ের নমুনা পরীক্ষার কথা ভাবছেন। সম্প্রতি দেশের একাধিক নদীতে মৃতদেহ ভেসে আশায় নদীর জলের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিহারে গঙ্গায় করোনায় মৃতের দেহ ভেসে আশায় রাজ্যে সরকারের তরফে আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা নিয়ে এখনও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। অনেকেই বক্তব্য করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ায় না।
আরও পড়ুন ফেসবুক বয়কট, সরব নেটিজেনরা
তবুও করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ সৎকারে বিশেষ বিধি নিষেধ জারি রেখেছে রাজ্য সরকার। যদিও অন ইন্ডিয়া মেডিক্যাল ইন্সটিটিউটের বক্তব্য, করোনা আক্রান্তের দেহ অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ভয় থাকেই যায়। তবে জল থেকে কোভিড ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, মূলত ড্রপলেট, কফ, কাশি, থুতু নিঃশ্বাস থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। WHO-এর কথায়, ‘সাঁতার কাটার সময় জলের মাধ্যমে Covid-19 ভাইরাস ছড়ায় না। কোনও কোভিড সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেই করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। তবে গঙ্গায় ভেসে আসা কোভিডে মৃতদের দেহগুলি থেকে সংক্রমণ এমনকী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে যে ব্যক্তি মৃতদেহগুলির সংস্পর্শে আসবেন তার শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে।