চণ্ডীগড়: ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে কংগ্রেস নেতা৷ যাঁর গায়ে এক সময় ছিল ভারতীয় দলের জার্সি, এখন তিনি কয়েদির পোশাকে৷ যে হাতে অনায়াসে ছক্কা হাঁকিয়েছেন সেই হাতেই জেলের কেরানির কলম পিষছেন নভজ্যোত সিং সিধু৷ পাতিয়ালার সেন্ট্রাল জেলে এক সপ্তাহ কাটিয়ে দিলেন নভজ্যোত সিং সিধু৷ কারাগারের সাত নম্বর বারাকের ২৪১৩৮২ নম্বর কয়েদি তিনি৷ আরও ৫১ সপ্তাহ সিধুকে থাকতে হবে এই ঠিকানায়৷ তবে জেলের নিয়মকানুন মেনে এবার কিছু কাজ করতে হবে প্রাক্তন ক্রিকেটারকে৷ ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের কৌতুক শো-গুলিতে বিচারকের আসনে দেখা গিয়েছে সিধুকে৷ ওই শো-গুলি থেকে কোটি কোটি আয় করেছেন পঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি৷ কিন্তু জেলে তাঁর জুটেছে ক্লার্কের কাজ৷
সেই কাজের মাইনে কত? জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম তিনমাস কয়েদিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ ওই সময় তাদের কোনও টাকা দেওয়া হয় না৷ প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর কর্মদক্ষতা অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে সেই মতো কাজ দেওয়া হয়৷ তাই সবার বেতনে তারতম্য লক্ষ্য করা যায়৷ তবে দৈনিক ৩০-৯০ টাকা আয় করে কয়েদিরা৷ দিনে আট ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷ যে টাকাটা কয়েদিরা পায় সেটি সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়৷ ৫৮ বছরের সিধুকে আদালতের দীর্ঘ রায়ের কপি কীভাবে ব্রিফ করতে হয় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ এর পাশাপাশি জেলের রেকর্ডগুলি ঠিকমতো গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছে৷
আদালতের রায় ঘোষণার পর গত সপ্তাহে শুক্রবার আত্মসমর্পণ করেন সিধু৷ প্রথম রাত জেলের কোনও খাবারই খাননি তিনি৷ পরে জানা যায়, সিধুর অনেক শারীরিক সমস্যা রয়েছে৷ তিনি সব খাবার খেতে পারেন না৷ যে কারণে সোমবার কড়া নিরাপত্তায় সিধুকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে৷ কংগ্রেস নেতার আইনজীবী আদালতের কাছে সিধুর জন্য স্পেশ্যাল ডায়েটের ব্যবস্থার আবেদন জানান৷ তিনি বলেন, ‘সিধুর এমবোলিজম এবং লিভারে সমস্যা রয়েছে৷ যে কারণে তিনি কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে পারেন না৷ পেঁপে, পেয়ারা, ডাবল টোনড মিল্ক, জাম জাতীয় ফল খান৷ চিনি ও ময়দা ছুঁয়েও দেখেন না৷’ চিকিৎসক বোর্ডের পরামর্শ মেনে আদালত সিধুর জন্য সেভেন-মিল ডায়েটে অনুমতি দেয়৷ বুধবার থেকে ডায়েট মেনে খাবার খাচ্ছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার৷