তামিলনাড়ু: বালেশ্বর আতঙ্কের মধ্যেই বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল চেন্নাই-এগমোর এক্সপ্রেস (Chennai Egmore Express)। এক রেলকর্মীর তৎপরতায় এড়ানো গেল দুর্ঘটনা। তামিলনাড়ুতে চেন্নাই এগমোর এক্সপ্রেসের একটি কোচে বড়সড় ফাটল দেখা দেয় রবিবার। যাত্রীদের তড়িঘড়ি নামিয়ে নিয়ে খালি করা হল কামরা। তামিলনাড়ুর (Tamilnaru) সেনগোট্টাই স্টেশনে ঢোকার সময় আচমকাই চেন্নাই এগমোর এক্সপ্রেসের এস৩ কোচে চাকার নীচে বড় ফাটল দেখা যায়। ফাটলটি লক্ষ্য করেন এক রেলকর্মী। তিনি পদস্থ কর্তাদের খবর দেন। দ্রুত রেলের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। যাত্রীদের দ্রুত নামিয়ে নিয়ে আসা হয়। সেই কোচ বদলে অন্য একটি কোচ জুড়ে দেওয়া হয় গাড়িতে। বেশ কিছুক্ষণ পর ট্রেন গন্তব্য স্থলে রওনা দেয়। ওই রেলকর্মীকে সোমবার পুরস্কৃত করে মাদুরাই ডিভিশন।
এদিকে, সোমবার সেই ওড়িশাতেই ফের লাইনচ্যুত হল একটি মালগাড়ি (Goods Train)। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ওড়িশার বারগড় জেলায় মেন্ধাপলি স্টেশনে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি মালগাড়ি। ইস্ট কোস্ট রেলওয়ের মুখপাত্রের তরফে জানানো হয়েছে, চুনাপাথর বোঝাই এই দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়িটি একটি সংকীর্ণ রুট দিয়ে খনি এলাকা থেকে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির পথে যাচ্ছিল। বারগড় জেলায় মেন্ধাপলি স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয় মালগাড়িটি। তবে এই রেললাইন ভারতীয় রেলের আওতায় পড়ে না। বেসরকারি সিমেন্ট সংস্থার তরফে এই নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব। যেহেতু এই সংকীর্ণ রেললাইন, রোলিং স্টক, ইঞ্জিন, ওয়াগন এবং ট্রেন ট্র্যাক পুরোটাই সিমেন্ট সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন। এখানে ভারতীয় রেলের কোনও ভূমিকা নেই। ওডিশার বারগড় জেলায় দুঙরি চুনাপাথরের খনি এবং এসিসি সিমেন্ট প্ল্যান্টের মাঝে রয়েছে এই সংকীর্ণ রেললাইন।
অন্যদিকে ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত সোমবার থেকেই শুরু করল কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। খড়গপুরে এদিন কমিশনের তরফে প্রত্যক্ষদর্শী, রেলকর্মী সহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে। ওড়িশা সরকার জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনার নিহত ১৫১ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি পৌঁছনো, এমনকী শেষকৃত্যের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আহত ৭০০-রও বেশি। হতাহতদের মধ্যে পশ্চিমবাংলারই বেশি মানুষ রয়েছেন। রাজ্য সরকার হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। দুর্গতদের পাশে থাকার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাঁর দার্জিলিং সফরও বাতিল করে দেন।
করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Express) ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর পুনরায় নতুন করে রেললাইন পাতা হয়েছে। রবিবার রাতে সবেমাত্র নতুন লাইন দিয়ে মালগাড়ির ট্রায়াল রান হয়েছে। সোমবার সকালেও বন্দে ভারত-সহ বেশ কিছু ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এখনও রেললাইনের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। বৈদ্যুতিকরণের কাজ চলছে। বালেশ্বর (Balasore) লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। নির্দিষ্ট গতির তুলনায় ধীরে চলছে ট্রেনগুলি। তাই শনি, রবির পর সোমবার ফের বালেশ্বর আপ ও ডাউন লাইনের একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। মূলত, পুরী এক্সপ্রেস (Puri Express), শতাব্দী এক্সপ্রেস (Shatabdi Express), কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসের মতো সুপারফার্স্ট ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে। খবরটি জানিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।