নয়াদিল্লি: হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে কারও নাম কলেজিয়াম পরপর দু’বার সুপারিশ করলে তা কেন্দ্র সরকার বা আইনমন্ত্রক মেনে নিতে বাধ্য৷ ১৯৯২ সালের এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজিয়াম এবং কেন্দ্র বিচারক নিয়োগের মেমোরেন্ডাম অব প্রসিডিউর (এমওপি)-র নিয়মে এমনটাই বলা আছে৷ তারপরও সেই নিয়ম উপেক্ষায় আইনি জটিলতার সৃষ্টি হল৷ যদি এই আইন সংশোধন করে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক দ্বিতীয়বারের সুপারিশ ফেরত পাঠাত তাহলে এই সমস্যার সৃষ্টি হত না৷
কারণ, শীর্ষ আদালত কলেজিয়াম সুপারিশ করা ১৪ আইনজীবীর নামের তালিকা ফেরত পাঠিয়েছে কেন্দ্র৷ যাঁদের নাম দেশের ১৪টি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে সুপারিশ করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল৷ তাঁদের মধ্যে তিন মহিলা আইনজীবীও রয়েছেন৷ কিন্তু, ওই ১৪ জনের নামের তালিকা পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক ফেরত পাঠিয়েছে বলে খবর৷ জাতীয় ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ জানিয়েছে, এই সুপারিশ এক বছরের বেশি সময় ধরে কেন্দ্র সরকারের কাছে জমা ছিল৷ কয়েক জনের ফাইল প্রায় ২৪ মাসের বেশি সময় জমা ছিল৷ যা কার্যত নজিরবিহীন৷
আরও পড়ুন- রাম ছাড়া অযোধ্যা কিছুই না, রাষ্ট্রপতির মন্তব্যে অসন্তুষ্ট বিরোধীরা
‘দ্য প্রিন্ট’-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ জনের মধ্যে ২ জনের নাম দ্বিতীয় বারের জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ এর থেকেই পরিষ্কার কলেজিয়াম ওই দুই জনের নাম দ্বিতীয়বার সুপারিশ করলেও তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক৷ সূত্রের খবর, ১৪ জনের মধ্যে পাঁচ জনকে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল৷ এছাড়াও, ৪ জনকে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে সুপারিশ করা হয়৷ তাঁদের নাম ২০২০ সালের অগস্ট মাসে পাঠানো তালিকায় ছিল৷ ২০১৯ সালের মার্চ মাসে দুইজনের নাম জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল৷
আরও পড়ুন-নিশানায় ছিল মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান! কাবুলে রকেট হামলা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
ফিরে আসা ফাইলের মধ্যে কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে সুপারিশ করা এক আইনজীবীর নামও দ্বিতীয়বার রয়েছে৷ এই আইনজীবীকে ২০১৯ অক্টোবরে সুপারিশ করা হয়৷ যিনি মার্চ মাসে অবসর নিয়েছিলেন৷ একই ভাবে কেরালা হাইকোর্টের জন্য সুপারিশ করা আইনজীবীর নাম পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে৷ শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম যাঁর নাম ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সুপারিশ করে এবং যিনি ২০২১ সালের মার্চ মাসে অবসর নেন৷
আরও পড়ুন-কাবুলে মিসাইল হামলার দায় স্বীকার করল আইএস
আইনমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড়৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি আইন মন্ত্রক কলেজিয়ামের নির্দিষ্ট সুপারিশ না মেনে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের বিচারপতির আসনে বসাতে চাইছে?