ওয়েবডেস্ক- গ্রামের স্কুলগুলিতে ( School ) একটা সময় ছিল স্কুলছুটের রমরমা। কারণ নিতান্ত হতদরিদ্র পরিবারগুলিতে পড়াশোনা ছিল বাহুল্যতা। ছোট ছোট ছেলে- মেয়েদের সংসারের হাল ধরতে রোজগারের পথে নামিয়ে দিতে বাধ্য হতেন তাদের বাবা মায়েরাই। একটা সময় স্কুলে শুরু হয় মিড মে মিল (Mid Day Meal)। স্কুলে গেলে অন্তত খাবার জুটবে, সেই আশায় স্কুলমুখি হয় পড়ুয়ারা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ৭টি রাজ্যে স্কুলগুলি পড়ুয়াদের প্রাতরাশ বা জলখাবারের (Break Fast) জন্য কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, তবে বিষয়টিকে এখনও বিবেচনার বিষয় হিসেবে দেখছে। আর্থিক দিক বিচার করে কেন্দ্রের তরফে এখনও সাড়া মেলেনি। ছাত্রদের স্কুলে উপস্থিতি এবং শিক্ষার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে সাতটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে NEP-এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে PM-POSHAN সম্প্রসারণের বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এই ৭টি রাজ্য হল রাজস্থান, কেরল, ছত্তিশগড়, দিল্লি সহ কেন্দ্রশাসিত রাজ্য। এই ৭টি রাজ্যই কেন্দ্রের কাছে পিএম পোষণ বা মিড ডে মিলের অধীনে স্কুলগুলিতে প্রাতরাশ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। এই সাতটি রাজ্যের পাশাপাশি সিকিম, লাক্ষাদ্বীপ, গুজরাটও প্রাতরাশের জন্য কেন্দ্রের উত্তরের প্রতীক্ষায়।
জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে কেন্দ্র প্রাতরাশের জন্য পিএম পোষণ যোজনার সুপারিশ হয়। তবে কেন্দ্র এখনও বাস্তবায়ন করেনি।
আরও পড়ুন- SIR ইস্যুতে মোদি সরকারকে নিশানা! কী বললেন প্রশান্ত কিশোর?
সাতটি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই প্রাতরাশ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ করেছে, এছাড়াও ১১টি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এই প্রকল্পটি সম্প্রসারণের জন্য অনুরোধ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কেরালা, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, গোয়া এবং মেঘালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেপ্টেম্বরে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে চিঠি লিখে ১৫তম অর্থ কমিশন চক্রের জন্য বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত এই প্রকল্পটি সম্প্রসারণের প্রস্তাব প্রস্তুতের তাদের পরামর্শ চেয়েছিল, যা ২০২৫-২৬ বছরের সাথে শেষ হবে। এখনও পর্যন্ত স্কুলগুলিতে শুধুমাত্র মিড ডে মিল দেওয়া হয়।
জাতীয় শিক্ষানীতি বলছে, গবেষনায় দেখা গেছে, একটি পুষ্টিকর প্রাতরাশ একজন মানুষকে অনেক বেশি প্রাণবন্ত রাখে। যা পড়ুয়াদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য ভালো। পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হবে। মিড ডে মিল-এর পাশাপাশি প্রাতরাশ দিলে পড়ুয়াদের অধ্যয়নে তা অধিক কার্যকরী। ২০২১-২২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যখন এই প্রকল্পের অধীনে সকালের প্রাতরাশের প্রস্তাব দিকে তখন অর্থ মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে। শিক্ষা, নারী, শিশু, যুব ও ক্রীড়া সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আগস্ট ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রাতরাশ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যয় অর্থ কমিটির পর্যায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় “এই প্রস্তাবে সম্মত হয়নি”। “২০২৫-২৬ সাল পর্যন্ত মিড ডে মিল প্রকল্প অব্যাহত রাখার জন্য বিষয়টি এখন মন্ত্রিসভায় জমা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জলখাবারে প্রস্তাবটি আনা হবে কিনা সেই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কারণ এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৬০০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে, ফলে টাকার ভয়ে পিছিয়ে কেন্দ্র।
জাতীয় শিক্ষানীতি সুপারিশ বাস্তবায়নে কী কাজ করছে কেন্দ্র, এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রণালয় বলেছে, “এটি প্রক্রিয়াধীন।”
দেখুন আরও খবর-