নয়াদিল্লি: মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধান৷ এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ৩৮ শতাংশ থেকে কমে ১৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে৷ যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ মে মাসে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকে বাংলায় ক্রমেই বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে৷ এই পরিস্থিতিতে রবিবার দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে শ্যামাপ্রসাদের জন্মস্থানে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা৷
নাড্ডা নতুন করে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতি গঠনের পর এই প্রথম বৈঠক হল৷ বলে রাখা ভালো, নীল বাড়ির দখলের লড়াইয়ে তৃণমূলের কাছে বিশ্রিভাবে হারের পরেও বাংলাকে গুরুত্ব দিতে এখান থেকে এবার অধিক সংখ্যায় নেতাকে জাতীয় কর্মসমিতিতে জায়গা দিয়েছিল বিজেপি৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, তাদের অনেকেই দলের কোনও কাজে যোগ দেন না অথবা তৃণমূলে চলে গিয়েছেন৷ যেমন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার পরেও জে পি নাড্ডার আশা, স্বপন দাশগুপ্ত, অনুপম হাজরা এবং কৈলাস বিজয়বর্গীর হাত ধরে আবার রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াবে বিজেপি৷ এদিন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, ‘আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের আশ্বস্ত করছি, আমরা আপনাদের পাশে আছি৷ রাজ্যে নতুন করে আমাদের পথ চলা শুরু হবে৷’
আরও পড়ুন: হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বেআইনি কার্যকলাপ আইনে ১০২টি মামলা, কড়া নিন্দা ত্রিপুরা সিপিএমের
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় রকেট গতিতে বিজেপির উত্থান হয়েছিল৷ প্রবল মোদি হাওয়ায় ভর করে বাংলা থেকে ১৮টি লোকসভা আসনে পদ্ম ফুটিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিল বিজেপি৷ কিন্তু দু’বছরের মধ্যে পুরো চিত্র বদল৷ ২১-এর বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিধ্বস্ত হয় গেরুয়া শিবির৷ এজন্য দলের নেতাদের অতিরিক্ত আত্মতুষ্টি এবং কিছু ভুল-ভাল সিদ্ধান্তকে দায়ী করে রাজনৈতিক মহল৷ তৃণমূলের বিরাট জয়ের পর রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে৷ নেতাদের বিরুদ্ধে কর্মীদের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছে৷ ফলে কর্মীদের মনোবল তলানিতে৷ তার প্রভাব পড়ছে সংগঠনে৷
সেটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও এদিন দিয়েছেন জেপি নাড্ডা৷ বুঝিয়ে দিয়েছেন, পায়ের তলার মাটি শক্ত করে আবার রাজ্যে তৃণমূলের বিকল্প শক্তি হিসেবে উঠে আসবে বিজেপি৷ সেই সঙ্গে দলের নেতাদের নতুন টার্গেট ধরিয়ে দিয়েছেন নাড্ডা৷ তিনি বলেন, ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বুথস্তরের কমিটিগুলি গঠন সেরে ফেলতে হবে৷ বাংলার নির্বাচন ও উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হলেও নাড্ডার দাবি, অন্যান্য জায়গায় দলের ভোটবৃদ্ধি হয়েছে৷ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপির ভোটের হার বেড়েছে৷ এদিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিজেপির তাবড় তাবড় নেতারা৷