নয়াদিল্লি: বীরভূমের রামপুরহাটের ‘গণহত্যা’ নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে সোমবার দেখা করলেন (Jagdeep Dhankhar Meets Amit Shah) রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালকে। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই ছবি সোশাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ারও করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। তবে, দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি রাজ্যপাল (Governor Jagdeep Dhankhar)। তবে, মনে করা হচ্ছে, বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই দু’জনের কথা হয়েছে। রামপুরহাট কাণ্ড নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশদ রিপোর্ট দিতে পারেন রাজ্যপাল।
গত সোমবার, ২১ মার্চ সন্ধ্যায় রামপুরহাট-১ ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরেই উত্তজেনার সৃষ্টি হয় (Rampurhat violence) বগটুই গ্রামে। ওই রাতেই দুই নাবালক-সহ আট জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে সোনা ওরফে সঞ্জু শেখের পরিবারেরই ৭ জন রয়েছেন। রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিত্সাধীন এ দিন আরও একজন মারা গিয়েছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতি শুধু নয়, সরগরম হয় সংসদও।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1508356458169389056?s=20&t=3YptbTg1e3Cz-mn_ttHIMw
বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) দ্বারস্থ হয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন। শুভেন্দুর দাবি ছিল, পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৫ না ৩৫৬ ধারা জারি হবে, তা কেন্দ্র ঠিক করবে। কিন্তু, রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। শুধু বিজেপি নয়, ৩৫৫-র দাবি তুলেছেন অন্য বিরোধীরাও।
বগটুই নিয়ে রাজনৈতিক এই চাপানউতোরের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তভার তুলে দিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ৩০ সদস্যের একটি দল ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থল বগটুই গ্রামে গিয়ে গত তিন দিন ধরে নমুনাও সংগ্রহ করেছে। অভিযুক্তদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও রামপুরহাট হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করেছে। পাশাপাশি দিল্লি থেকে আসা ফরেনসিক দলও তদন্তের প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করেছে। এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ২৩ জনকে। ধৃতদের মধ্যে রামপুরহাট ব্লক সভাপতি আনিরুল হোসেনও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: SpiceJet: উড়তে গিয়ে বিপত্তি! বড় দুর্ঘটনা এড়াল স্পাইসজেটের বিমান, তদন্তের নির্দেশ
রামপুরহাটের ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগদীপ ধনখড়ের টুইট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রামপুরহাটের ঘটনার নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে। বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই ষড়যন্ত্র বলে তিনি দাবি করেন। মমতার এই দাবি কিন্তু নস্যাৎ করে দেন রাজ্যপাল। মমতাকে পালটা সতর্ক করে বলেন, ‘রাজ্যপালের ত্রুটি না-খুঁজে, বাংলায় আইনের শাসন চালু করুন। রাজ্যপাল সংবিধানের মধ্যে থেকেই কাজ করেন।’ এই টুইট-যুদ্ধের মধ্যেই অমিত শাহের সঙ্গে ধনখড়ের এই বৈঠক রাজ্য রাজনীতির জন্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।