নয়াদিল্লি: শনিবারই টুইট করে বিজেপির এক বড় মাপের নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ পরে জানা গেল, ওই নেতা আর কেউ নন, অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ কেজরিওয়ালের টুইটের পর দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পিপিই কিট বরাতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন৷ তিনি জানান, কোভিডের সময় মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী ও ছেলের এক ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিকে পিপিই কিট সরবরাহের বরাত দিয়েছিল অসম সরকার৷ ওই শিল্পপতির কাছ থেকে কেনা পিপিই কিট পিছু বাড়তি ৩৯০ টাকা দেয় রাজ্য৷ যেখানে অন্য সংস্থা অনেক কমে পিপিই কিট দিচ্ছিল৷ আপের বিস্ফোরক অভিযোগের পরই মুখ খোলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী৷ সমস্ত অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারি দেন হিমন্ত৷
ইডির হাতে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের গ্রেফতারের পরই তুঙ্গে উঠেছে আপ-বিজেপি তরজা৷ বিজেপির বিরুদ্ধেও তারা দুর্নীতির অভিযোগ তোলে৷ এদিন কেজরিওয়ালের টুইটের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মণীশ সিসোদিয়া বলেন, ২০২০ সালে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জরুরি ভিত্তিতে একটি সংস্থাকে পিপিই কিট সরবরাহের বরাত দেন৷ ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছেড়ে আসার পর তাঁকে সর্বানন্দ সোনওয়াল মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়৷ সিসোদিয়ার অভিযোগ, ওই সংস্থার কাছ থেকে কেনা এক একটি পিপিই কিটের দাম পড়ে ৯৯০ টাকা৷ অথচ অন্য সংস্থা ৬০০ টাকায় পিপিই কিট দিচ্ছিল৷ দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে যখন জরুরি অবস্থা চলছিল তখন এই ভাবে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ তাঁর আরও অভিযোগ, বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার মালিক বিশ্বশর্মা পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ৷ সেই ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তাঁকে ওই বরাত দেওয়া হয়েছিল৷
দু’দিন আগে একটি সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদনও বের হয়৷ সেই রিপোর্ট দেখিয়ে সিসোদিয়া বলেন, ‘শর্মার স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সংস্থা চুক্তিমতো পিপিই কিট দিতে পারেনি৷ তখন ছেলের বিজনেস পার্টনারের কাছ থেকে ১৬৮০ টাকায় পিপিই কিট কেনে অসম সরকার৷’ সিসোদিয়ার প্রশ্ন, বিজেপি শাসিত রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে এখন কেন চুপ গেরুয়া শিবির?
পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ তিনি দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেন, কোভিডের সময় তাঁর স্ত্রী বিনামূল্যে ১৫০০ পিপিই কিট সরকারকে দিয়েছিল৷ এরপরই তিনি দিল্লির আপ সরকারের বিরুদ্ধে কোভিডের সময় অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে জানান, কোভিডে মৃত এক অসমিয়ার দেহ দিল্লির মর্গ থেকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁকে ৭ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল৷ মণীষ সিসোদিয়ার সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছিল৷ কিন্তু দিল্লি সরকার কোনও সহযোগিতা করেনি৷ তাদের তরফে সাতদিন কোনও সাড়াশব্দ পায়নি অসম সরকার৷