কোহিমা: ভুল বোঝাবুঝির জেরে নয়৷ ইচ্ছাকৃতভাবে খুন (Intension To Murder) করা হয়েছে নিরীহ গ্রামবাসীদের৷ নাগাল্যান্ডে ১৩ জন নিরীহ নাগরিকের (Firing in Nagaland) মৃত্যুর দায় প্যারা সেনার উপর চাপাল সে রাজ্যে পুলিশ৷ সেনার বিরুদ্ধে এফআইআরে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামবাসীদের হতাহতের উদ্দেশেই গুলি চালিয়েছিল সেনা৷
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার৷ অসম সীমান্তবর্তী নাগাল্যান্ডের মন জেলায় কয়লাখনিতে কাজ করে ভ্যানে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমিকরা৷ ওই ভ্যানের উপর গুলি চালায় সেনাবাহিনী৷ ঘটনাস্থলেই সাত জনের মৃত্যু হয়৷ খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা সেখানে পৌঁছে সেনার উপর হামলা করে৷ গ্রামবাসীরা এক জওয়ানকে ঘিরে ফেলে৷ কিন্তু সেই জওয়ানের গুলিতে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়৷ তাঁকেও পিটিয়ে মারে গ্রামবাসীরা৷
ততক্ষণের ক্ষোভ আঁচ নাগাল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে৷ সেনার ভূমিকার তীব্র নিন্দা করা হয়৷ যদিও ঘটনার দুঃখপ্রকাশ করে সেনাবাহিনী জানায়, তাদের কাছে সূত্র মারফত খবর এসেছিল অরুণাচল থেকে জঙ্গিরা নাগাল্যান্ড থাকবে৷ ভ্যানে জঙ্গিরা আছে ভেবে গুলি চালিয়েছিলেন জওয়ানরা৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হচ্ছে৷ আইন অনুসারে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ সেনার এই বিবৃতির পরেও ক্ষোভ এতটুকুও কমেনি৷ বরং দেশজুড়ে সেনাবাহিনীর আচরণের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে৷ আজ সোমবার নাগাল্যান্ডে প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে তৃণমূল৷ বিরোধী থেকে সাধারণ মানুষ, সবার বক্তব্য, সূত্রের ভুল তথ্যের অজুহাতে ঘটনার দায় এড়াতে পারে না সেনাবাহিনী৷
আরও পড়ুন: Firing in Nagaland: নাগাল্যান্ডে নিরীহ নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলল বিজেপি
এদিকে সেনাবাহিনীর বিবৃতি খণ্ডন করে দিয়েছে নাগাল্যান্ড পুলিশ৷ ২১ প্যারা স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআরে পুলিশ জানিয়েছে, খুনের উদ্দেশেই গুলি চালানো হয়েছিল৷ ওই সময় ঘটনাস্থলে কোনও পুলিশ গার্ড ছিল না৷ সেনার তরফেও স্থানীয় থানায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ চাওয়া হয়নি৷ সেনাবাহিনী এই অপারেশনের নাম দিয়েছিল ‘ডেথ’৷ এই সব ঘটনায় পরিষ্কার নিরীহ নাগরিকদের খুন এবং জখম করতেই এমন জঘন্য কাজ করেছে সেনাবাহিনী৷
আরও পড়ুন: Nagaland Firing: অগ্নিগর্ভ নাগাল্যান্ডে কারফিউ জারি, সেনার গুলিতে নিহত বেড়ে ১৪
নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৩ নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটি গুলিচালনার ঘটনার নিন্দা করেছে। ওই এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আবেদনও জানানো হয়েছে। দলের রাজ্য কমিটির প্রধান আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী তেমজেন ইমনা আলং বলেন, ‘এই ঘটনা শান্তির সময় যুদ্ধ-অপরাধের সমতুল্য। একে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করা চলে। কোনও ভাবেই এই ধরনের ঘটনা সহ্য করা যায় না। গোয়েন্দা রিপোর্টের ব্যর্থতার উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়াটা সবচেয়ে বড় অজুহাত। হত্যার জন্য দায়ী জওয়ানদের জবাব দিতে হবে কেন তাঁরা বুঝতে পারেনি, শ্রমিকরা নিরস্ত্র ছিল। কিসের ভিত্তিতে কমান্ডিং অফিস গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন, তাও দেখতে হবে।’