প্রয়াগরাজ: রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে অখিল ভারতীয় অখণ্ড পরিষদের সভাপতি নরেন্দ্র গিরির। এই মহন্তের মৃত্যুতে তাঁর শিষ্য অনন্ত গিরির নাম উঠে এসেছে। মৃত সন্ন্যাসীর সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ।
সোমবার সন্ধেয় দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় নরেন্দ্র গিরির মৃতদেহ। দেখা যায়, নাইলনের দড়িতে ঘরের মধ্যে ঝুলছেন নরেন্দ্র গিরি। সেখান থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানেই অনন্ত গিরির নাম সহ আরও দুজনের নাম পায় উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। এরপর উত্তরাখণ্ডের পুলিশের সাহায্যে হরিদ্বার থেকে গ্রেফতার করা হয় অনন্ত গিরিকে। গ্রেফতারের আগে অনন্ত গিরি জানিয়েছেন, তাঁকে ইচ্ছা করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি এসবের কিছুই জানেন না। পুলিশ সমস্ত বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক। তাঁর আর গুরুজির মধ্যে সম্পর্ক খারাপ এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কে এই অনন্ত গিরি?
স্বঘোষিত ধর্মগুরু বলে দাবি করা এই অনন্ত গিরি, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বড় হনুমান মন্দিরের মহন্ত। তিনি নিজেকে যোগগুরু বলেও দাবি করে থাকেন। ৩৮ বছর বয়সী এই মহন্তের নামে মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণের মামলাও রয়েছে। ২০১৬ সালে রোটি হিলের এক প্রার্থনা সভায় এই মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। এরপর ২০১৮ তেও এক মহিলার শ্লীলতাহানি করেন বলে তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। সিডনিতে ৬ সপ্তাহের জন্য আধ্যাত্মিকতার প্রচারে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন এই সাধু। তাঁকে বহুবার স্ক্রিন শেয়ার করতে দেখা গিয়েছে, যোগগুরু রামদেবের সঙ্গে।
অনন্ত গিরির সঙ্গে রামদেব
আরও পড়ুন: কেরলের পর তামিলনাড়ু, গত ২৪ ঘন্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত ১,৬৬১ জন
নরেন্দ্র গিরির সঙ্গে বিবাদ
পুলিশ সূত্রে খবর, নরেন্দ্র গিরি তাঁর সুইসাইড নোটে একাধিক কথা উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে আশ্রমের মিনার পুনঃসংস্কার করার কথা উল্লেখ রয়েছে। পুলিশের অনুমান, মূলত আশ্রম কেন্দ্রিক নানান জটিলতার কারণেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল মহন্তের জীবনে। সেইসঙ্গে শিষ্য অনন্ত গিরির প্ররোচনাতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। আজ, মঙ্গলবার মহন্তের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অনন্ত গিরির সঙ্গে বেশ কিছুদিন আগে থেকে বিবাদ দেখা দেয় মহন্তের। পঞ্চায়েত পরিষদ থেকে বরখাস্ত হওয়ায় বিগত কয়েক মাস ধরেই শিষ্য অনন্তের সঙ্গে একরকম ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ চলছিল নরেন্দ্র গিরির।পঞ্চায়েতে সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতায় মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন অনন্ত গিরি। রুরকিতে তাঁর নিজের উপার্জনে আশ্রম নির্মাণ পরিকল্পনাও বাতিল করা হয়েছিল বলে তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়েও অখন্ড পরিষদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান অনন্ত গিরি। তারপর পঞ্চায়েত থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন: দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার, অস্বাভাবিক মৃত্যু অখণ্ড পরিষদ সভাপতি নরেন্দ্র গিরির