নয়াদিল্লি: জ্ঞানবাপী বিতর্কের মধ্যে কুতুব মিনার কমপ্লেক্স খোঁড়ার নির্দেশ কেন্দ্রের। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা ধরমবীর শর্মা দাবি করেছেন, কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে নির্মাণ হয়েছিল পঞ্চম শতকে রাজা বিক্রমাদিত্যের আমলে৷ তার এই দাবির পর কুতুব মিনার নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়। এর পর তড়িঘড়ি সংস্কৃতি মন্ত্রক আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে কুতুব মিনারে খনন চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রক এএসআইকে খনন সংক্রান্ত প্রতিবেদনও জমা দিতে বলেছে। তাদের নির্দেশ, মসজিদ থেকে ১৫ মিটার দূরে মিনারের দক্ষিণে খনন কাজ শুরু করা যেতে পারে। সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব গোবিন্দ মোহন ২১ মে ওই এলাকা ঘুরে দেখেন। গোবিন্দ মোহন তিনজন ইতিহাসবিদ, চারজন এএসআই অফিসার এবং গবেষকদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন। এএসআই আধিকারিকেরা সচিবকে জানান, ১৯৯১ থেকে কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে খনন কাজ হয়নি।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) মুখপাত্র বিনোদ বনসাল দাবি করেন, কুতুব মিনার আসলে ‘বিষ্ণু স্তম্ভ’ ছিল এবং ২৭টি হিন্দু-জৈন মন্দির ভেঙে ফেলার পর প্রাপ্ত সামগ্রী দিয়ে কাঠামোটি তৈরি করা হয়েছিল। কুতুব মিনারের অভ্যন্তরে ১২০০ বছরের পুরানো ভগবান নরসিংহ মূর্তি, ভগবান গণেশ এবং ভগবান কৃষ্ণের মূর্তি পাওয়া যাওয়ার পরে বেশ কয়েকটি হিন্দু দল কুতুব মিনারের নাম পরিবর্তন করে বিষ্ণু স্তম্ভে রাখার দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: Balurghat: কালবৈশাখীর ঝড়ে লন্ডভন্ড দক্ষিণ দিনাজপুর, তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকা
অযোধ্যা-বাবরি মসজিদ মামলার নিষ্পত্তির পর মুসলিম শাসকদের আমলে তৈরি ভারতের নানা স্থাপত্যকীর্তি ও স্মৃতিশৌধের নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হিন্দুত্ববাদীরা৷ তাঁদের দাবি, হিন্দু মন্দির ভেঙে সেগুলি তৈরি করা হয়েছে৷ কুতুব মিনারের ক্ষেত্রেও একই দাবি ওঠে৷ এমনকী আদালতে পিটিশন দায়ের করে কুতুব মিনারের মেহরউলি কমপ্লেক্সের অন্দরে পুজো-চর্চার অনুমতি চাওয়া হয়৷
কুতুব মিনারকে নিয়ে কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রী প্রহ্লাদ পটেল দাবি করেছিলেন, বহু মন্দির ধ্বংস করে সেটি তৈরি করা হয়েছিল৷ কুতুব মিনার যেখানে দাঁড়িয়ে সেখানে যে বহু মন্দির ও দেবদেবীর মূর্তি ছিল তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে৷ ১৭ মে প্রহ্লাদ পটেল বলেছিলেন, ‘ফারসিতে লেখা আছে যে ২৭টি মন্দির ভেঙে কুতুব মিনার তৈরি করা হয়েছিল৷ এএসআই বা সরকার ওটা লেখেনি৷ যারা ওই কাজে জড়িত ছিল তারাই লিখেছে৷ এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে৷ এই ধরনের স্পর্ধা অন্য দেশে করা হলে এতক্ষণে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হত৷’