ওয়েব ডেস্ক: বৃহস্পতিবার এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ল আমদাবাদে (Ahmedabad Plane Crash)। টেক-অফ করার পর সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Sardar Vallabhbhai Patel International Airport) থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ভেঙে পড়ে যাত্রীবাহী বিমানটি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বিমানটি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভেঙে পড়ে বিমান। বহু মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের (BJ Medical College UG Hostel Meghani Nagar) উপরে ভেঙে পড়ে বিমানটি। এরপরেই তাতে আগুন ধরে যায়। কালো ধোঁয়া এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিমানের একটি অংশ বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ভেতরে আটকে আছে। বিমানের সামনের অংশ হস্টেলের ছাদ ভেঙে ঢুকে পড়েছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হস্টেল বিল্ডিংটি। বিমান দুর্ঘটনায় ২০ জন জুনিয়র ডাক্তারেরও মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছেন ১৫ জনের বেশি। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ঘটনার পর গোটা দেশের জনপ্রতিনিধিরা শোকবার্তা জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল সহ অন্য়রা শোক প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওড়ে এআই-১৭১ বিমানটি। বিমানটি রানওয়ে ২৩ থেকে ওড়ার এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এটিসি-র সঙ্গে। তারপর আর বিমানের পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ করাী সম্ভ হয়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, অহমদাবাদের বিমানবন্দর থেকে উড়ানের পাঁচ মিনিট পরে মেঘানি নগর এলাকায় ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। যে বিল্ডিংয়ে বিমানটি আছড়ে পড়েছে, সেখানে অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা থাকতেন। স্থানীয়দের দাবি, হস্টেলে চলছিল দুপুরের খাবার খাওয়ারের তোড়জোর। ধীরে ধীরে লাঞ্চ টেবিলে জমায়েত বাড়ছিল এমবিবিএস পড়ুয়াদের। কিন্তু মুহূর্তেই সব অন্ধকার। বিকট বিস্ফোরণ বিল্ডিংয়ে, চোখের সামনে যেন ভেঙে পড়ল সব। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি তখন আছড়ে পড়েছে বিজে মেডিক্যাল কলেজের ইউজি হোস্টেলের মেসে। ওই হস্টেলে প্রায় ৫০ জন ইন্টার্ন থাকতেন। দুর্ঘটনার সময়ে যাঁরা সেখানে ছিলেন, সকলেরই মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আমেদাবাদের ভেঙে পড়া বিমানে কোন দেশের কত যাত্রী ছিলেন? দেখুন প্যাসেঞ্জার লিস্ট
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিমানে যাত্রী এবং বিমানকর্মী মিলিয়ে ২৪২ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ভারতীয় ছিলেন ১৬৯ জন। এ ছাড়া ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, সাত জন পর্তুগিজ এবং এক জন কানাডিয়ান ছিলেন বিমানে। অহমদাবাদের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বিমানের কারও বেঁচে থাকার আশা নেই। ওই বিমানে ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। তাঁরও মৃত্যু হয়েছে। যাত্রীদের পরিবারের জন্য হটলাইন নম্বর 1800 5691 444 চালু করেছে Air India.
যে বহুতলে বিমানটি ভেঙে পড়েছে, সেখানে থাকেন সিভিল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। তার পাশের একটি বিল্ডিংয়ে থাকেন একটি বিল্ডিংয়ে থাকেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা। তাঁরা সকলেই অহমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। কত জন হতাহত হয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। শুধু বিজি মেডিক্যাল কলেজই নয়, বিমান দুর্ঘটনার কারণে মেঘানি নগরের অনেক ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি নির্ণীয়মান বহুতলের ছবি প্রকাশ্য়ে এসেছে, যার একটা বড় অংশ পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। দমকলবাহিনী সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ বিমানটিতে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি মজুত ছিল। কারণ আমদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল সেটির। এই কারণেই উড়ানটি মাটিতে আছড়ে পড়তেই ভয়ংকর বিস্ফোরণ হয়। দুর্ঘটনার পরে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও। ওই বিমানবন্দর আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্য খবর দেখুন