হরিয়ানা: সাংগঠনিক জনসভায় প্রকাশ্যে উষ্কানি দিলেন করনি সেনা প্রধান সুরাজ পাল আমু। ‘লাভ জেহাদ’-এর সমর্থন করে প্রকাশ্যে বলেন ‘গলা কেটে নেব’। উল্লাসে ফেটে পড়ল সমর্থকরা। মুহুর্তের মধ্যে ভিডিও ভাইরাল নেট দুনিয়ায়, অথচ ঘুম ভাঙল না প্রশাসনের। সভাস্থলে নির্বাক দর্শক হয়ে রইলেন শতাধিক পুলিশকর্মী। নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, মহাপঞ্চায়েত সভার আয়োজকরাও আইনের চোখে বেকসুর রয়ে গেলেন। বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিও ট্যুইটার হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করে ছড়িয়ে দেওয়া হল। করনি সেনা প্রধানের ঔদ্ধত্যে মুখে কুলুপ পদ্ম শিবিরের। ‘পদ্মাবত’ ছবির জন্য নায়িকা দীপিকা পাদুকোনের মাথার দাম চেয়েছিলেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ এই নেতা। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দিল্লিতে অশান্তি ছড়ানোর ঘটনায়ও তিনি জড়িত। আইনজীবীদের বক্তব্য, সমর্থকদের উত্সাহিত করার জন্য কোনও সম্প্রদায় অথবা ধর্মীয় গোষ্ঠির বিরুদ্ধে বৈষম্য, শত্রুতা ছড়ানো অথবা তাদের ভাবাবেগে আঘাত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আরও পড়ুন : মিঠুনকে ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এ এবং বি ধারার বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। অভিযোগ প্রামাণিত হলে তিন বছরের জেল জরিমানার নিদান রয়েছে সংবিধানে। অথচ বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সুরজ পাল আমু। এ প্রসঙ্গে হরিয়ানার ডেপুটি পুলিশ কমিশনর বরুন সিঙ্গলা জানিয়েছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিও বিষয় তিনি জানেন। আশান্তি আটকাতে সভাস্থলে ১০০ বেশি পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। ওই নেতার বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিরোধীদের অভিযোগ, আইন লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে যে কোনও পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে পুলিশ। সুরাজ পাল শাসকদলের নেতা হওয়ায় কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন। লাভ জেহাদ, জমি জেহাদকে সামনে রেখে মহাপঞ্চায়েত জনসভার আয়োজন করেছিল স্থানীয় বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। জনসভায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে করনি সেনার প্রধান সুরাজ পাল অমুর বিরুদ্ধে। স্থানীয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের নেতা সত্য নারায়ণ জানিয়েছেন, প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই গ্রামের লাভ জেহাদের ঘটনার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করতে হয়েছিল তাদের। হরিয়ানার বিজেপি মুখপাত্র ডিপি কৌশিক অবশ্য স্বীকার করেছেন অমুর মন্তব্য আপত্তিকর। দল এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। ‘পদ্মাবত’ ছবি নিয়ে মামলা করে হেরে গেছিলেন ।২০১৮ সালে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন আমু। দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করতে দেয়নি বিজেপি। অভিযোগ রয়েছে বিস্তর, অথচ বিতর্ককে সযত্নেই পালন করে গেছে গেরুয়া শিবির।