লখনউ: নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে দাবি করলেন উত্তরপ্রদেশের ললিতপুরে নাবালিকা ধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত পুলিস অফিসার তিলকধারী সরোজ। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিলকধারী বলেন, আমি একশো শতাংশ নির্দোষ। তিনি কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেন। তিলকধারী বলেন, আমি চাই, কোনও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ সংস্থা তদন্ত করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। পুলিস অফিসারের এই কথা বলার অর্থ, তাঁর নিজেরই পুলিসের সম্পর্কে কোনও আস্থা নেই।
এদিকে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী রাকেশ সচান জানান, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি হবে। যেখানে বুলডোজার চালানো দরকার, সেখানে বুলডোজার চলবে। কেউ রেহাই পাবে না। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নামই হয়ে গিয়েছিল বুলডোজার বাবা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে তিনি বুলডোজার নীতি নিয়েছিলেন। ভোটের আগে বিরোধীদের বড় ইস্যু ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। যদিও বিজেপির দাবি ছিল, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মুখ্যমন্ত্রী কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তাঁর জন্যই সমাজবিরোধীরা ভয়ে ভয়ে ছিল। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল ললিতপুর যায়। কংগ্রেস নেতারা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন। এক নাবালিকা গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে গিয়ে ললিতপুরের পালি থানার মধ্যেই ফের ধর্ষিতা হয়। অভিযোগ ওঠে থানার এসএইচও তিলকধারী সরোজের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে দুদিন ধরে তোলপাড় চলছে ললিতপুরে।
আরও পড়ুন: Reconstruction Berhampore Murder: গোরাবাজারে সুতপা খুনের পুনর্নির্মাণ সুশান্তকে দিয়ে
পুলিস সূত্রে খবর, ২২ এপ্রিল গ্রামের চার যুবক ভোপালে নিয়ে যায় ওই নাবালিকাকে। সেখানে চারদিন আটকে রেখে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। দুদিন আগে ওই চার যুবক অসুস্থ অবস্থায় নাবালিকাকে গ্রামে ফিরিয়ে দেয়। এরপর মেয়েটি পালি থানায় অভিযোগ করতে যায়। থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তিলকধারী জানায়, পরের দিন গোপন জবানবন্দি দিতে থানায় আসতে হবে নাবালিকাকে। সেইমতো কাকিমাকে নিয়ে থানায় আসে ১৩ বছরের ওই মেয়েটি। অভিযোগ, কাকিমার সামনেই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে ওই পুলিস অফিসার।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামছে প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি। দলের নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব ললিতপুরে যাচ্ছেন। তিনি নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন।
অভিযোগ উঠেছে, থানার মধ্যেই ১৩ বছরের ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেন খোদ ইনস্পেক্টর ইনচার্জ। থানার ইনচার্জ-সহ ছয় পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ফেরার ইনচার্জকে খুঁজে বার করার জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস এফআইআর করে।
আরও পড়ুন: Berhampore murder case: নিখুঁত পরিকল্পনামাফিক সুতপাকে খুন, জেরায় জানাল সুশান্ত
ঝাঁসির ডিআউজি যোগেন্দ্র কুমারকে গোটা ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, ডিআইজি নিজেই পালি থানায় রীতিমতো ক্যাম্প খুলে বসেছেন। তিনি জানান, কাউকে রেয়াত করা হবে না। ডিআইজি সব পুলিসকর্মীকে থানায় দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।