মুম্বই: ভোল বদলাচ্ছে আরব সাগর৷ গত কয়েক বছর ধরে আরব সাগরের জলস্তরের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ তার জেরে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা৷ সাধারন জ্ঞান বলে, সমুদ্র যত বেশি উষ্ণ হবে তত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়বে৷ গবেষণা করে আবহবিদরা দেখেছেন, গত দু’দশকে আরব সাগরে সাইক্লোনের সংখ্যা ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷
আরও পড়ুন: বেড়াতে গিয়ে করোনা বিধি নিয়ে বিভ্রান্তি, সোমবার নয়া নির্দেশিকা পর্যটন দফতরের
অথচ বঙ্গোপসাগরের তুলনায় আরব সাগরের জলতল ঠান্ডা৷ সেই কারণে সবচেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরেই সৃষ্টি হয়৷ জলবায়ুগত তথ্য অনুযায়ী, দুই সাগর মিলিয়ে বছরে গড়ে ৫টি ঘূণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার কথা৷ বঙ্গোপসাগরে ৪টি হলে আরব সাগরে ১টি৷ মে-নভেম্বর সময়কাল হল সাইক্লোন তৈরির আদর্শ সময়৷
কিন্তু এই ভারসাম্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সমুদ্র থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আরব সাগরে তৈরি হচ্ছে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়৷ সেই ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে উপকূলে৷ তার পর ধ্বংসলীলা চালিয়ে দুর্বল হয়ে চলে যায়৷
চলতি বছর মে মাসে সাইক্লোন তাউকটের স্মৃতি এখনও তরতাজা৷ আরব সাগরে তৈরি হওয়া তাউকটে ছিল মরশুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড়৷ এর জেরে কেরল, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও গুজরাতে প্রবল বৃষ্টি হয়৷ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় জনজীবন৷ ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর৷ এর আগে আরব সাগরে মিকানু (২০১৮), বায়ু (২০১৯), নিসর্গ (২০২০) -র জন্য একই ছবি দেখা গিয়েছিল পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে৷ সবক’টি ছিল তীব্র ঘূর্ণিঝড়৷ যেগুলির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কিমি৷
আরও পড়ুন: বাড়ছে ATM ব্যবহারের খরচ, আগামী বছরের শুরুতেই লাগু নতুন নিয়ম
তবে ২০১৯ সালে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ‘ঝড়’ ওঠে৷ এক ঘূর্ণিঝড় থাকতে থাকতেই আরও এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার জন্য যেন প্রস্তুত ছিল৷ এমনকী জোড়া সাইক্লোনও প্রথম দেখা যায়৷ ওই বছর বায়ু, হিকা, কিয়ার ও মহার দেখা মেলে আরব সাগরে৷ যা বিরল বলে জানিয়েছিলেন আবহবিদরা৷ পুরোনো নথি ঘেঁটে আবহবিদরা জানান, ১৯০২ সালে পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছিল আরব সাগরে৷ সেটাই সর্বোচ্চ৷ তার পর ২০১৯ সাল৷
তবে আতঙ্কের ভ্রুকুটির মধ্যে স্বস্তির খবরও আছে৷ পূর্ব উপকূলের মতো পশ্চিম উপকূল ততটা ঘূর্ণিঝড় প্রবণ নয়৷ তাই আরব সাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় থেকে ভারতের ভয় কম থাকে৷ বেশিরভাগ ওমান ও ইয়েমেনের দিকে সরে যায়৷ বহু ঘূর্ণিঝড় আবার মাঝ সমুদ্রেই বিলীন হয়ে যায়৷ বরং বঙ্গোপসাগরের ঝড়ে দেশের ভয় বেশি৷