কলকাতা: ২৩ অগাস্ট, ২০২৩, ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক চিরস্মরণীয় দিন। সেদিন ভারতীয় সময় সন্ধে ৬.০৪ নাগাদ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান ৩-এর (Chandrayaan 3) ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram)। আজ পর্যন্ত কোনও দেশ অজানা, অচেনা দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে পারেনি। সফট ল্যান্ডিংয়ের (Soft Landing) কয়েক ঘণ্টা পর বিক্রমের শরীর থেকে বেরিয়ে আসে ছয় চাকাওয়ালা রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)।
প্রজ্ঞানের চাকায় খোদাই করা আছে অশোক স্তম্ভ (Ashoka Stambha) এবং ইসরোর লোগো, তাই তার চাকা গড়াতেই চাঁদের মাটিতে ফুটে উঠেছে অশোক স্তম্ভ এবং লোগো। তবে ৬১৫ কোটি টাকা খরচ চন্দ্রপৃষ্ঠে স্রেফ ছবি আঁকতে যায়নি প্রজ্ঞান, তার প্রচুর কাজ রয়েছে। ইতিমধ্যেই চাঁদমামার বাড়ি ছ’দিন কাটিয়ে ফেলেছে সে। চাঁদে সূর্যের আলো থাকবে আর আটদিন। যা করার এর মধ্যেই করতে হবে।
আরও পড়ুন: একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াকে মারধর কংগ্রেস নেতার ছেলের
প্রজ্ঞানের চাকার যা সাইজ তাতে বড় গর্ত বা পাথর টপকে যাওয়া সম্ভব নয়। তার উপর তার গতিবেগও বেশি নয়, সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার মাত্র। ২৫ তারিখ ইসরোর তরফে জানানো হয়, আট মিটার পথ অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। সোমবার একটি টুইটে ইসরো জানায়, চার মিটার গর্তের সামনে পড়ে গতিপথ বদলে ফেলেছে প্রজ্ঞান। ঠিকঠাক কাজ করছে তার চারটি পেলোড ইলসা, চ্যাস্টে, রম্ভা এবং অ্যারে।
চাঁদে জলীয় বরফের (Water Ice) সন্ধান করছে প্রজ্ঞান। উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুতে জলীয় বরফের উপস্থিতি আগেই টের পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার সরজমিনে তদন্ত করছে ইসরোর রোভার। চাঁদে জল বা জলীয় বরফ খুঁজে পাওয়া গেলে তা হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। জলীয় বরফ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে তা চন্দ্রাভিযানে যাওয়া মহাকাশচারীদের পানীয় জলের উৎস হতে পারবে। যন্ত্রপাতি ঠান্ডা করতেও কাজে লাগবে এই জলীয় বরফ। তাছাড়া, জলের অণু ভেঙে হাইড্রোজেন দিয়ে জ্বালানি উৎপাদন করা যাবে এবং পড়ে থাকা অক্সিজেন মহাকাশচারীদের কাজে লাগবে। এই সমস্ত ব্যবস্থা যথাযথ হলে, মঙ্গল গ্রহে অভিযানের জন্য বেস ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে চাঁদকে।