কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: পরনে শুধু অন্তর্বাস। গায়ে কাদা-মাটি মাখা। এভাবেই ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালায় নামা তাঁদের অভ্যাস। নোংরা জল, বিষাক্ত গ্যাস এবং জলের মধ্যেই কেটে যায় তাঁদের অর্ধেক দিন। আর ওই বিষাক্ত জল, দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয় অনেকের।
কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে গত পাঁচ বছরে ভারতে প্রায় ৩৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ৪০ শতাংশই উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং দিল্লির।
১৯ জুলাই লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রী বীরেন্দ্র কুমার জানান, নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে ২০১৭ সালে ৯২ জন, ২০১৮ সালে ৬৭ জন, ২০১৯ সালে ১১৬ জন, ২০২০ সালে ১৯ জন, ২০২১ সালে ৩৬ এবং চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০১৩ ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং আইন অনুসারে ইতিমধ্যেই ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিংকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই আইন অনুসারে, নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে কোনও মানুষকে কাজে লাগানো যাবে না। সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক যন্ত্র দ্বারা কাজগুলি করা হবে। কিন্তু ওই আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এখনও সেই প্রাচীন পদ্ধতিতেই ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা বা সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হয় লোক নামিয়েই। তাঁদের নিরাপত্তার বিন্দুমাত্র ব্যবস্থাও করা হয় না বলে অভিযোগ। এমনকি কলকাতা শহরও এর ব্যতিক্রম নয়।
সম্প্রতি রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় পুরবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কৌশল কিশোর জানান, কেন্দ্রীয় সরকার যন্ত্রের সাহায্যে নিকাশিনালা পরিষ্কার করার জন্য ‘নমস্তে’ নামে একটি জাতীয় অ্যাকশন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর ফলে নালা, নর্দমা, সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে আসবে। শুধু তাই নয়, এর জন্য কেবলমাত্র দক্ষ কর্মীদেরই কাজে লাগানো হবে।