নয়াদিল্লি: রোহিণী কোর্টে শুটআউটের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। ধৃতরা হল- উমং এবং বিনয়। তারা উত্তর-পশ্চিম দিল্লির হায়দেরপুরের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, রোহিণী কোর্টের ৪ নম্বর গেটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই দুজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার দিন উমং এবং দুই শুটার রোহিণীর সেক্টর-৯ এর একটি শপিং মল থেকে আইনজীবীর পোশাক পরেছিল।
কোর্টে পৌঁছানোর পর দুই শুটার কোর্টরুমে চলে যায়। আইনজীবীর পোশাক থাকায় তাদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয়নি কারোর। উমং গাড়ি নিয়ে ৪ নম্বর গেটের বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল, গোটা অপারেশন শেষ হওয়ার পর ওই দুই শুটার কোর্টরুম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে আসবে। সেখান থেকে উমংয়ের গাড়িতে চম্পট দেবে তারা। কিন্তু প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ায় উমং পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: শুনানির মাঝেই মুহুর্মুহু গুলি, শুরু হল ছোটাছুটি
শুক্রবার রোহিণী আদালতের ২০৭ নম্বর কক্ষে শুনানি চলছিল। সেই সময় আচমকা একদল আততায়ী গুলি চালাতে শুরু করে। এর পর দুষ্কৃতীদের দু’টি দলের মধ্যে গুলিযুদ্ধ শুরু হয়। মৃত্যু হয় কুখ্যাত গ্যাংস্টার জিতেন্দর গোগী। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল দুই দুষ্কৃতীকে গুলি করে হত্যা করে। অপহরণ, খুন-সহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে নিহত গ্যাংস্টার জিতেন্দরের বিরুদ্ধে।
জিতেন্দর গোগী
২০২০-এ মার্চ মাসে তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ বিভাগ। একটি মামলার শুনানির জন্য তাকে ওইদিন কোর্টে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের দাবি, আততায়ীরা আইনজীবীর পোশাকে এসেছিল। কোর্টে সওয়াল শুরু হতেই জিতেন্দরকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা গুলি চালান আদালত কক্ষে মজুত পুলিশকর্মীরা। ঘটনার নেপথ্যে টিল্লু গ্যাং রয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: দিল্লির কোর্টরুমে গ্যাংস্টারদের এলোপাথাড়ি গুলি, কুখ্যাত ডন গোগী নিহত
দিল্লি পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা এনডিটিভিকে জানিয়েছিলেন, জিতেন্দরের বিরোধী গ্যাংয়ের দু’জন আদালতের ভিতরে জিতেন্দর গোগীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তখনই পুলিশ পাল্টা জবাব দেয় এবং ওই দুই হামলাকারীকে হত্যা করে। পুলিশ দ্রুত কাজ করেছে। উভয় হামলাকারীকে হত্যা করেছে। গোগী সহ মোট তিনজন মারা গিয়েছেন। এই দুটি দলের মধ্যে বিরোধ বহুদিনের। তাদের মধ্যে সংঘর্ষে ২৫ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছে।
রোহিণী কোর্টে শুটআউটের ঘটনায় বিচারকদের সুরক্ষায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করতে পারে সুপ্রিমকোর্ট। সামনের সপ্তাহে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হতে পারে। ওই ঘটনার পর প্রধান বিচারপতি রমানা দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিএন প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি এনভি রমানা মুখ্য বিচারপতি প্যাটেলকে পরামর্শ দেন, আদালতের কাজকর্ম যাতে প্রভাবিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ এবং বার উভয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য।
আরও পড়ুন: রোহিণী কোর্টে শুটআউট, বিচারকদের সুরক্ষায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করতে পারে সুপ্রিমকোর্ট