নয়াদিল্লি: বাদল অধিবেশনে সংসদে অচলবস্থার কারণে করদাতাদের প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। শনিবার সরকারি সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসনের বিরুদ্ধে পেগাসাস-সহ একাধিক ইস্যুতে বিরোধীদের হৈ-হট্টগোলের কারণে অধ্যক্ষ একাধিক দিন অধিবেশন মুলতুবি রাখেন।
আরও পড়ুন- বিজেপি ছাড়লেও রাজনীতি ছাড়ছেন না বাবুল
গত ১৯ জুলাই সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেদিন থেকেই বিরোধীরা পেগাসাস আড়িপাতা কাণ্ড নিয়ে আলোচনা চায়৷ পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের নেতৃত্বে গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেন৷ কিন্তু সরকার সেই নস্যাৎ করে। কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব বলেন, পেগাসাস ইস্যুকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
আরও পড়ুন- জাতীয় সড়কে IED উদ্ধার কাণ্ডে গ্রেফতার লস্কর জঙ্গি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, সংসদের অচলবস্থায় লোকসভার ৫৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৭ ঘণ্টা কাজ হয়েছে। আর রাজ্যসভায় ৫৩ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ১১ ঘণ্টা কাজ হয়েছে। সুতরাং, সংসদে এখনও পর্যন্ত ১০৭ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ১৮ ঘণ্টা কাজ হয়েছে। অর্থাৎ, সংসদের ৮৭ ঘণ্টা কাজের সময় অপচয় হয়েছে। তারমানে গোটা ক্ষতিটাই করদাতাদের৷ যার পরিমাণ ১৩৩ কোটির বেশি।
আরও পড়ুন- অলিম্পিকে ইতিহাস, প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতীয় মহিলা হকি দল
সপ্তাহে দফায় দফায় উত্তপত হয়েছে সংসদের দুই কক্ষ। বহুবার মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে অধিবেশন। পেগাসাস নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে সাসপেন্ড হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন। তারপরেও পিছু হঠছে না ঘাস ফুল শিবির। সকল বিরোধীদের নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।
আরও পড়ুন- চরম সংকট, রাত জেগে লাইন দিয়েও মিলছে না ভ্যাকসিন
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দুবাবু বলেছেন, “পেগাসাস নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ করে রয়েছেন? তিনি কেন তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না?” অন্য বিরোধী দলের নেতারাও স্নগসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সেই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন। তাঁদের সকলেই পেগাসাস নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- হাওয়ালা কাণ্ডে ধনখড়ের বিরুদ্ধে তথ্য জোগাড়ের তোড়জোড়, দিল্লিতে বৈঠকে মমতা-বিনীত
পেগাসাস নিয়ে যখন সংসদের দুই কক্ষ উত্তাল হয়েছে তখন পালটা বিরোধিদের আক্রমণ করেছে বিজেপি। তাঁদের বক্তব্য, “সংসদের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে বিরোধীরা।” এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তিনি বিজেপিকে মনে করিয়েছেন ২০১০ সালে ২জি কেলেঙ্কারির কথা। সেই সময়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ওঠা নানাবিধ কেলেঙ্কারি নিয়ে সংসদ অচল করে দিয়েছিল তৎকালীন বিরোধী বিজেপি। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সংসদের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
আরও পড়ুন- উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের জন্য বড় ঘোষণা সংসদের
সেই সময়ে কেন্দ্রে চলছে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার। কংগ্রেস পরিচালিত সেই সরকারের জোটসঙ্গী ছিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ক্যবিনেট মন্ত্রী। সেই সঙ্গে তৃণমূলের আরও ছয় সাংসদ ছিলেন সেই মন্ত্রিসভার সদস্য।