প্রতি ৩০ সেকেন্ডে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় একজনের, এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। এই রোগের প্রকোপ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত চিকিৎসকরা। তাই এই বার বিশ্ব হেপাটাইটস ডে, ২৮শে জুলাই ২০২১-র থিম- হেপাটাইটিস কান্ট ওয়েট (Hepatitis Can’t Wait)। অনেক ক্ষেত্রেই হেপাটাইটিস আক্রান্ত ব্যক্তি জানতে পারেন না যে তিনি অসুস্থ। অনেক ক্ষেত্রে আবার অন্যান্য পেটের সমস্যার সঙ্গে হেপাটাইটিসের উপসর্গ গুলিয়ে ফেলেন অনেকে। বিপদ বাড়ে এখান থেকেই৷ যখন জানা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই তখন খুব দেরি হয়ে যায়। তাই পেটের যে কোনও সমস্যা নিয়ে সজাগ থাকুন, সচেতন হোন। দেখে নিন এই ধরনের কোনও উপসর্গ আপনার বা আপানার পরিবারের কারও আছে কি না।
হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B) হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় লিভার। এই ভাইরাসে লিভারে সংক্রমণ হয়। এবং এই সংক্রমণের কারণে লিভার খারাপ হয়ে যেতে পারে। এমনকি লিভার ক্যানসারও হতে পারে। অবস্থার অবনতি হলে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও হতে পারে।
হেপাটাইটিস বি-র দু’ধরনের— অ্যাকিউট ও ক্রনিক। এই রোগের প্রথম ছমাসের পর্যায়কে অ্যাকিউট হিসেবে ধরা হয়। এই অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা পেলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যান। কিন্তু ছ’মাস পরেও যদি হেপাটাইটিসের রিপোর্ট পজিটিভ হয় তখন দীর্ঘদিনের বা ক্রনিক হিসেবে এই রোগকে ধরে নেওয়া হয়। এর ফলে লিভার ক্যান্সার ও লিভার সিরোসিসের মতো জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়।
হেপাটাইটিস বি-এ আক্রান্ত হলে বোঝার উপায়
হেপাটাইটিসে সংক্রমিত হওয়ার অন্তত এক থেকে ৪ মাস পরে উপসর্গ দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের ২ সপ্তাহ পর থেকেও উপসর্গ দেখা যায়। আবার ছোটো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও উপসর্গ দেখা যায় না।
হেপাটাইটিস বি হলে এই সমস্যাগুলোর কয়েকটি হতে বাধ্য। জন্ডিসের সমস্ত উপসর্গ-সহ তলপেটে ব্যথা, বমি ভাব, গা গুলিয়ে যাওয়া, হাঁটু ও গা হাতে পায় ব্যাথা, খিদে নষ্ট হয়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ক্লান্তি বা অলস ভাব আসা। তবে প্রত্যেক হেপাটাইটিস আক্রান্তের যে এই সমস্ত উপসর্গ হবে তার কোনও মানে নেই।
হেপাটাইটিস বি-র সংক্রমণ কীভাবে ছড়ায়
এটি মূলত একটি ভাইরাল ইনফেকশন তাই সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এটা ছড়াতে পারে। অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক বা সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত কিছুর ব্যবহারে এটা ছড়াতে পারে। মা সংক্রমিত হলে শিশুরও এই অসুখ হতে পারে। তবে হাঁচলে, কাশলে, চুমু খেলে বা হ্যান্ডশেক করলে এই ভাইরাস ছড়ায় না। রক্ত পরীক্ষা করে হেপাটাইটিস বি-র সংক্রমণ হয়েছে কি না, সহজেই জানা যায়।
হেপাটাইটিস বি-র প্রতিকার কোন পথে
হেপাটাইটিস বি-র ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে সবথেকে ভাল। তবে এই ভ্যাকসিন না-নিয়ে থাকলে এবং এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে মনে হলে চিকিৎসকরা আপনাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইঞ্জেকশান দেবেন। এর ফলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শরীরে ছড়িয়ে পড়বে না।
হেপাটাইটিস বি নিয়ে সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।