আধুনিক জীবনযাপন কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলে দেশে ক্রমশ বাড়ছে ডায়বিটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। চিনের পরে গোটা বিশ্বে ডায়বিটিস আক্রান্তদের পরিসংখানের নিরিখে দ্বিতীয বৃহত্তম দেশ ভারত। সব বয়সের আক্রান্তদের মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় সাড়ে সাত কোটিরও বেশি মানুষ আক্রান্ত এই রোগে। আর ডায়বিটিসে আক্রান্তদের উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ। সহজ ভাষায় প্রায় এক রকম হাতে হাত ধরেই যেন মানুষের দেহে বাসা বাঁধে এই রোগ।
বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়বিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই সমস্য ভীষণ ভাবে দেখা যায় বলে জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই প্রকারের ডায়বিটিসে, ইনসুলিন রেসিজট্যান্সের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই বৃদ্ধির ফলে শরীরের বেশি করে ইনসুলিন নিঃসরণ হয়। আর এই প্রক্রিয়ার ফলে শরীরে বেশি পরিমাণে লবন ও জল ধরে রাখে এবং এর ফলে হাই ব্লাড প্রেসারের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
ডায়বিটিসের আরেকটি প্রাণঘাতি দিক হল এই রোগ দীর্ঘদিন থাকার ফলে শরীরের ছোট রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। এদিকে হাই ব্লাড প্রেসার ও হাই সুগারের ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এছাড়াও কিডনি ও রেটিনোপ্যাথির মত সমস্যার সম্ভাবনাও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
তাই ডায়বিটিসে আক্রান্তদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। এক্ষেত্রে এই বিশেষ দিকগুলিতে নজর দিলে সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিদিন নিয়মিত ব্লাড প্রেসার মেপে নেওয়া উচিত।
ব্লাড প্রেশার মাপার অন্তত পাঁচ মিনিট আগে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকা উচিত।
ব্লাডপ্রেশারের রিডিং নেওয়ার অন্তত আধঘন্টার আগে থেকে ধুমপান, খাওয়া দাওয়া, শরাীরচর্চা, চা বা কফি খাওয়া বা অন্য কোনও ক্যাফেনযুক্ত পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
নিশ্চিত করত হবে যাতে ব্ল্যাডার খালি থাকে। ফুল ব্ল্যাডার বিপি রিডিং প্রভাবিত করতে পারে।
বিপি মাপার যে যন্ত্রটি আছে তার কাফের মাপ যেন ঠিক থাকে এবং চামড়া সংস্পর্শে থাকে এবং ঢিলা যেন না হয়।
বিপি রিডিং নেওয়ার সময় সোজা হয়ে বসতে হবে। পায়ের পাতা থাকবে ফ্লাট। এবং হাত থাকবে হৃদযন্ত্রের বরাবর জায়গায়। আর রিডিং নেওয়ার সময় নড়াচড়া করলে চলবে না।
এইভাবে পর পর ৩টি রিডিং নিতে হবে এবং শেষের দুটো রিডিংয়ের অ্যাভারেজ বার করে যেটা আসবে সেটা হবে বিপির আসল রিডিং।
এবং নিয়মিত ব্লাড সুগার ও ব্লাড প্রেশার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এর ফলে গম্ভীর কোনও সমস্যা প্রতিরোধ করা যাবে।