তাপমাত্রার পারদ নামছে সঙ্গে শুষ্ক হচ্ছে বাতাস। শীতকাল মানেই শুষ্ক ত্বকের হাজারো সমস্যা। এই সময়ে ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল ও আর্দ্রতা যাতে বজায় থাকে সেদিকে বিশেষ নজর রাখার প্রয়োজন। তবে শুধু ময়শ্চারাইজার ত্বকে লাগালেই চলবে না ত্বক যাতে শীতের রুক্ষ ঠান্ডা হাওয়ায় সহজেই আর্দ্রতা না হারায় সেই দিকে নজর দিতে হবে। তাই শুষ্ক ত্বকের অধিকারিণীরা এই সময় এই বিউটি টিপসগুলো মেনে চললে অবশ্যই উপকার পাবেন। যেমন-
স্নানের নিয়ম
শীতকালে গরম জলের হাতছানি এড়ানো সহজ নয় এদিকে ঠান্ডা জলেও স্নান সম্ভব না। গরম জলের বাষ্পের কারণে ত্বকে ন্যাচারাল অয়েল শুষে নেয়। এর পরে ত্বক নিজস্ব আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই গরম জলের বদলে ইষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। এবং স্নানের পরে গা ডলে মুছবেন না বরং চেষ্টা করুন নরন তোয়ালে দিয়ে আলতো হাতে জল মুছে নিন। জোরে জোরে গা ডলে মুছলে ত্বকের আর্দ্রতা সহজেই নষ্ট হয়ে যায়।
ময়শ্চারাইজারের সঠিক ব্যবহার
ময়শ্চারাইজারের গুরুত্ব নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই ঠিকই তবে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘ফর অল স্কিন’ জাতীয় ময়শ্চারাইজার না বেছে বরং শুধুমাত্র শুষ্ক ত্বকের ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। বেশ কিছু ময়শ্চারাইজার এমন আছে যা শুধুমাত্র ত্বকের ওপরের স্তরে থাকে। তাই এমন ময়শ্চারাইজার বাছুন যা ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করে আর্দ্রতা জোগাতে সক্ষম। প্রয়োজনে পেট্রোলিয়াম জেলি বা বডি অয়েল ব্যবহার করুন। ভাল ফল পাবেন।
এক্সফোলিয়েট
শুষ্ক ত্বকের মৃত কোষ ত্বকের ওপরের স্তরে জমে থাকে এর ফলে ত্বক দেখতে ভীষণ রুক্ষ ও জৌলুসহীন হয়ে পড়ে। তাই এক্সফোলিয়েশনের প্রয়োজন। তবে ত্বক শুষ্ক হলে এক্সফোলিয়েশন করার সময় মাথায় রাখতে হবে তা যেন মাইল্ড হয় এবং উপকরণ হিসেবে এতে যেন ক্ষতিকারক রাসায়নিক না থাকে।
হাইড্রেটিং মাস্ক
শুষ্ক ত্বক মানেই তা আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যার্থ। তাই মনে রাখতে হবে শুধু আর্দ্রতার জোগান নয় জরুরী সেই আর্দ্রতা যাতে দীর্ঘক্ষণ ত্বকে বজায় থাকে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত ১ থেকে ২ বার এই হাইড্রেটিং মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক সতেজ থাকবে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন।
সানস্ত্রিন
শুষ্ক ত্বক মানে আর্দ্রতার অভাব। এর ফলে ত্বকে সহজেই বলিরেখা ও কুঁচকে যাওয়ার মত সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই কোনও সুরক্ষা ছাড়া এই অবস্থায় রোদে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই শীতকালের রোদ পোয়াতে যতই ভাল লাগুক না কেন সানস্ক্রিন না মেখে একেবারেই রোদে দাড়াবেন না। এমনি রোদের তেজ কম থাকলেও ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মী সহজেই আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
ঠৌঁটের যত্ন নিন
শুষ্ক ত্বকের সমস্যার থেকে আরও একধাপ এগিয়ে ঠোঁটের সমস্যা। আপনার ত্বকের ধরণ যাই হোক না কেন সঠিক যত্ন না নিলে ঠোঁট ফেটে রক্ত বরোনো কিংবা ব্যাথা হয় খুব সহজেই। আর এখন আবার দীর্ঘক্ষণ মাস্কের ভিতরে থেকে ঘষা লেগে ঠোঁট সহজেই আর্দ্রতা হারাচ্ছে। তাই ঠোঁটে মৃত কোষ ঠোঁটে জমে থেকে যাতে সমস্য না বাড়ায় তাই ঠোঁট নিয়মিত এক্সফোলিয়েট ও ময়শ্চারাইজ করার প্রয়োজন। এবং দিনে এক বার নয় যত বার প্রয়োজন লিপ বাম লাগিয়ে নিন।
নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমানে জল খেতে হবে
ত্বকে শুষ্ক হওয়ার পিছনে একাধিক কারণ থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ত্বকে জলের অভাবের কারণ শুষ্ক হয়ে পড়ে ত্বক। তাই পর্যাপ্ত জলে খাওয়ার প্রয়োজন। শীতকালে জল তেষ্টা কম পায় তাই মনে করে নিয়মিত ২ থেকে ৩ লিটার জল খান। দেখবেন এর প্রভাব পড়বে আপনার ত্বকের ওপর।
এই নিয়মগুলো মনে চলুন শীতকাল উপভোগ করুন ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখুন।