স্বাস্থ্যের পক্ষে ওটমিল কতটা কার্যকরী তা এখন হেলদি ইটিংয়ের হিড়িকে আমাদের সকলের জানা। কিন্তু শরীরের পাশপাশী ত্বকের যত্ন নিতে ওটমিল বাথের উপকারিতা কি আপনার জানা আছে? ওটমিলের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি, অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে পাশাপাশি এটা ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতার জোগান দেয়। তাই ক্লান্ত, জৌলুসহীন ত্বকের পরিচর্যা করে সারিয়ে তুলতে এবং সতেজ করে তুলতে এই ওটমিল দারুন ভাল কাজ করে। তা হলে ত্বকের পরিচর্যায় কীভাবে ব্যবহার করবেন এই ওটমিল দেখে নিন-
কীভাবে তৈরি করবেন ওটমিল
প্রথমে যে কোনও পাড়ার দোকান থেকে প্লেন ওটস কিনে নিন। কেনার সময় যাচাই করে নিন যেন এগুলো প্রসেস্ড না হয়। তা হলে ওটসের উপকারিতা থেকে আপনার ত্বক বঞ্চিত থাকবে। তাই আনপ্রসেস্ড ওটস কিনে মিক্সার গ্রাইনডারে ভাল করে পিষে নিন। একেবারে মিহি করে নিন। এবার বাথটাবে গরম জল নিয়ে নিন। এতে পাওডার মিশিয়ে দিন। চাইে আপনার পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এগুলি ঢেলে জল নাড়তে থাকুন। যাতে ওটমিল ভাল ভাবে জলে গুলে যায়। ওটমিল জলে ভালভাবে গুলে গেলে দুধের মত দেখতে লাগবে। এবার বাথটাবে কুড়ি মিনিট সময় কাটিয়ে উঠে পড়ুন। গা ভাল করে ধুয়ে নিন।
এই ওটমিল বাথ নিলে এ ভাবে উপকৃত হবে আপনার ত্বক
ত্বককে জ্বালা, অ্যালার্জি মুক্ত করে
ওটমিলে পলিফেনলের মত উপাদান আছে। এগুলি ত্বকের জ্বালা-যন্ত্রণা নিরাময় করে। বিশেষ করে ত্বকে রাশ বা অ্যালর্জির সমস্যা হলে এগুলো ভীষণ উপকারী। চুলকানির সমস্যাও কমিয়ে দেয়।
ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্দ্রতা জোগায়
মুখের বা শরীরে ত্বক শুষ্ক থাকলে ওটমিল বাথ অত্যন্ত উপকারী। তা আপনি যতই ময়শ্চারাইজিং লোশন লাগান না কেন। ওটমিল বাথের পর ত্বকে যে পরিমাণ আর্দ্রতা আসবে তা অন্য কিছুতে আসবে না। শুধু আর্দ্রতার জোগান নয় এটা আপনার ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে তাই এর ফলে ত্বক সতেজ ও সুন্দর দেখায়। ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে আসে।
ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে
বিভিন্ন কারণে ত্বকের এই পিএইচ ব্যালেন্স নষ্ট হতে পারে। তা হলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়। ওটমিল বাথ ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা এনে এই পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে।
ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে
স্ট্রেস বা টেনশন থাকলে শরীরকে সেই চাপ থেকে মুক্ত করে। ওটমিলের বিশেষ উপাদানের কারণে এটা সম্ভব হয়। এবং ত্বকের ওপরের স্তরে মৃত কোষ জমতে দেয় না।
চুলের স্বাস্থ্য ভাল করে
ওটমিলে থাকা প্রকৃতিক খনিজ পদার্থগুলি চুলের পক্ষেও ভীষণ উপকারী । এগুলো চুল বড় করতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে খুব কার্যকরী। এছাড়াও যেহেতু চুলে আর্দ্রতা জোগায় ওটমিল তাই ওটমিলের এই জল দিয়ে মাথা ধুলে খুশকির সমস্যার সমাধানও করা যায়।
এক্সফোলিয়েশনের কাজেও ভীষণ কার্যকরী ওটমিল
শুধু তো মুখ না গোটা শরীরে এক্সফোলিয়েশনের প্রয়োজন। না হলে ত্বকের মৃত কোষ ত্বকের ওপরের স্তরে জমে গিয়ে বডি অ্যাকনের মতো সমস্যা হতে পারে। তাই রোমকূপের মুখে জমা ময়লা, ঘাম সরিয়ে, পর্যাপ্ত আর্দ্রতা প্রদান করে রোমকূপের মুখ ওই আর্দ্রতা দিয়ে বন্ধ করে দেয় এর ফলে ত্বকের হারানো জৌলুস ফিরে আসে। ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। এবং বডি অ্যাকনে বা চুলকানির মত সমস্যা হয় না।
আর শুনলে অবাক হবেন ওটমিল বাথের ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। রোমান সাম্রাজ্যের মহিলার ত্বক সুন্দর রাখতে এই ওটমিল বাথ নিতেন।