কলকাতা: কথায় বলে ভ্রমণপিপাসু (Traveler) বাঙালির (Bengali) পায়ের তলায় সরষে৷ তারা সবসময়ই বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছুটি খোঁজে৷ একটু ছুটি পেলেই হল, দমবন্ধকর পরিবেশ থেকে একটু মুক্তির বাতাস নিতে অনেকে বেড়িয়ে পড়েন পাহাড়ের টানে। আর বাংলায় পাহাড় মানেই তো মূলত উত্তরবঙ্গ। এই উত্তরবঙ্গ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসাধারন সুন্দর সুন্দর জায়গা। যা উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে যান। সেরকমই একটা নির্জন ও শান্ত পরিবেশের খোঁজ দেব আমরা।
‘বাঁশবাড়ি’ নাম শুনলেই মনে হবে বাঁশের তৈরি কোনও একটা বাড়ি। তাই তো? একদমই ঠিক।তাই কিন্তু এই বাঁশবাড়ি আর পাঁচটা বাড়ির মত সাধারণ নয় কিন্তু। প্রকৃতির মাঝে বাঁশ দিয়ে সুন্দর করে তৈরি প্রাণবন্ত এই বাড়িটি। খুবই শান্ত ও নির্মল পরিবেশের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যেদিকেই চোখ যাবে শুধুই সবুজ আর সবুজ। ঠিক যেন মনে হবে প্রকৃতির কোলে রয়েছেন আপনি।
আরও পড়ুন: Uttarakhand | দেবভূমিতে ফের দুর্যোগ, ভূমিধসের জেরে অবরুদ্ধ যমুনোত্রী, বদ্রীনাথ জাতীয় সড়ক
এই বাঁশবাড়ির কুটির ঘরটি বেশ বড়। দু থেকে তিন জনের জন্য পর্যাপ্ত এই ঘরটি। এছাড়াও সমস্ত প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ড্রেসিং এরিয়া, গিজার থেকে শুরু করে বসার ব্যবস্থা সহ একটি প্রশস্ত ব্যালকনি। হ্যাঁ! একটি ব্যালকনিও রয়েছে। এটাই হল এই কুটিরের বাড়তি পাওনা। অসাধারণ প্রকৃতির রূপ কাছ থেকে দেখার জন্য এই বারান্দাটি হল আদর্শ। প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে আছে একটি ফার্ম স্টে। প্রচুর পাখির আনাগোনা লেগেই আছে। ক্যামেরা বন্দি করতে তাই সব সময় তৈরী থাকুন। বাঁশবাড়ি জায়গা টা এমন জায়গা আছে যে এখন থেকেই উপভোগ করা যায় সব কিছুই। নদী চা বাগান পাহাড় সবটাই দেখতে পাবেন। ওখানে গেলে দেখতে পাবেন তাদের নিজেরাই একটি ফার্ম হাউস গড়ে তুলেছেন। এবং তাদের প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী ও বাঁশের তৈরী। প্লাস্টিক কোনো বালাই নাই। শুধু সেখানে বসে সবুজ আর আশেপাশের পাহাড় দেখেই আপনার দিন কেটে যাবে। শুনতে পাবেন পাখির কোলাহলও। এখানে এমনই প্রকৃতির রূপ, যা দেখে আপনি উপন্যাসও লিখে ফেলতে পারবেন।
আপনি বাঁশবাড়ি গেলে দেখতে পাবেন কাচের বড়ো বড়ো জানলা-দরজা। ঘরে বসে স্বচ্ছ প্রকৃতিকে আপনি দেখতে পারবেন। এছাড়াও বেলকনিতেতে দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন চারিদিকে গাছপালা ভরা মনোরম পরিবেশ। এছাড়াও সামনে চা বাগান। সে এক অপরূপ দৃশ্য। না দেখলে অনুভব করা সহজ না। সারাদিনের ব্যস্ততাকে ফেলে রেখে এই বাঁশের বাড়িতে নিশ্চিন্তে দু থেকে একটা দিন কাটান।
এখানে রুম ভাড়া ৩ হাজার টাকার মত। সঙ্গে সকালের জল খাবার। আর দুপুরের মিল এবং রাতের খাবার ধরা থাকে। বাঁশ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গেলেই দেখতে পাবেন ছোট রঙ্গিত নদী। ইচ্ছা মত নদীর ধরে বসে কিছুটা সময় কাটান। চুপচাপ বসে বসে বয়ে চলা নদীর শব্দ আর পাখির ডাক আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। দার্জিলিং এখন থেকে ২০ কিমি। আর নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ৯০ কিমি দূরে অবস্থিত। সন্ধায় এখানে ক্যাম্প ফায়ারেরও ব্যবস্থা আছে।
দার্জিলিং থেকে বিজনবাড়িতে আসতে ছোট গাড়ি ভাড়া নেবে ১৫০০ টাকা আর বড় গাড়ি ভাড়া করে নিলে পড়বে প্রায় ২৩০০ টাকার মত। আর জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া নিলে পড়বে ছোট গাড়ি ২০০০ টাকা। বড়ো গাড়ি ৩০০০ টাকা মত।বিজানবারি হসপিটাল সামনে পৌঁছানোর পর আপনাকে হোটেল লোকেরাই আসে নিয়ে যাবে। যেতে যেতে পথের মধ্যে দেখতে পাবেন ঝর্না। অসাধারন মনমুগ্ধকর দৃশ্য।