বাড়ির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রান্নাঘর। শরীর সুস্থ রাখতে খাবারের প্রয়োজন। আর এই খাবার যাতে স্বাস্থ্যকর হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রান্নাঘর। অপরিচ্ছন্ন রান্নাঘর মানেই জীবাণুদের আঁতুড়ঘর। এ দিকে আজকাল প্রত্যেকেই নিজেদের কর্মজগৎ নিয়ে এত ব্যস্ত যে, বাড়িতে তেমনভাবে সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। ওপর-ওপর পরিষ্কার করা হলেও। রান্নাঘরের তাকে বা ব্যবহার না হওয়া বাসনপত্রে ধুলোময়লা জমে। এ ছাড়া, গ্যাসের ওভেন-সহ এ-রকম অনেক জায়গায় নিত্যদিনের রান্নার পরে তেল-মশলা জমে রান্নাঘর নোংরা হয়ে যায়। এ ভাবেই বাড়তে বাড়তে সপ্তাহের শেষে পাহাড়প্রমাণ হয়ে ওঠে রান্নাঘর পরিষ্কারের কাজ। তাই রান্নাঘর পরিষ্কার রাখতে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি। এতে আপনার রান্নাঘর অনেকটাই পরিষ্কার থাকবে। সুরক্ষিত থাকবে আপনার পরিবার।
কাজের ফাঁকে সাফসুতরো
বিশ্বায়নের যুগে চটজলদি খাবারে সিদ্ধহস্ত হলেও বাঙালি খাবারের যে কোনও পদ রান্না করতে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় লাগেই। এই সময় রান্নাঘরে ফোনে কথা বলে বা ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে অযথা না-ঘুরে রান্নাঘর পরিষ্কারের কাজে লাগানো যেতে পারে। মশলা কষানোর পর খাবার সেদ্ধ করার সময় বাসন ধুয়ে ফেলুন বা রান্নাঘরের তাকগুলো পরিষ্কারের কাজ কিছুটা এগিয়ে রাখুন।
সিঙ্ক পরিষ্কার রাখুন
বাসন ধুয়ে ফেলুন। সিঙ্কে দীর্ঘক্ষণ এঁটো বাসন পড়ে থাকলে তাতে আরশোলা ঘুরে বেড়ায়। তাই বাসন জমতে দেওয়া হবে না। রান্না করার ফাঁকে ফাঁকেই বাসন ধুয়ে ফেলুন। এতে এক সঙ্গে একগাদা বাসন ধুতে হবে না। আপনার কাজও হাল্কা হবে, রান্নাঘরও পরিষ্কার থাকবে। বাসন মাজার পর সিঙ্কের প্লাগহোলে বা নালীর মুখে যে খাবারের ছোট টুকরো জমে যায়, ওগুলো নিয়ম মেনে পরিষ্কার করুন। বাসন মাজার পর কিচেন ক্লিনার দিয়ে সিঙ্ক ভাল করে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুখে নিন। দেখবেন এর ফলে আপনার রান্নাঘরে এঁটো বাসন ও খাবারের জমা টুকরো থাকার কারণে বাজে গন্ধ বেরোবে না।
রান্নার জায়গা পরিষ্কার রাখুন
অনেক সময় তাড়াহুড়োতে রান্নাঘরের এদিক-ওদিক রান্না করা খাবার চলকে পড়ে। এ ছাড়াও তরকারি কাটার সময় একটা দুটো সবজির টুকরো ছড়িয়ে থাকে। রান্নাঘরের কাজ মিটে গেলে এই সব পরিষ্কার করা অত্যন্ত আব্যশক। না হলে এর ফলে ঘরে মাছি, আরশোলা এমনকি ইঁদুরের সমস্যা দেখা দিতে পারে।পরিষ্কার রাখতে হবে রান্নাঘরের সিঙ্কের পাইপ। প্রত্যেক ১৫ দিন অন্তর পরিষ্কার করুন।
সরঞ্জাম নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন
হাঁড়ি-কড়াই বা আধুনিক সরঞ্জাম, ছুরি, হাতা-খুন্তি, চামচ রান্নাঘরের সমস্ত সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখুন। চেষ্টা করুন এগুলির ব্যবহার হয়ে গেলে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নির্দিষ্ট জায়গায় তুলে রাখুন। রান্নাঘর গুছিয়ে রাখলে তা দেখেও পরিষ্কার মনে হবে।
মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম কারার সময় এটা মেনে চলুন
যতটা পারবেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাবার ঢেকে গরম করুন। তবে সেক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারযোগ্য ঢাকনা নিন। না হলে কিচেন রোল দিয়েও খাবার ঢেকে নিয়ে গরম করুন। এর ফলে খাবার গরম করার সময় চলকে পড়বে না। আপনার মাইক্রোওয়েভের ওভেনও পরিষ্কার থাকবে।
রান্নাঘরে ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার রাখুন
রান্নাঘরের সমস্ত কাপড়, স্পঞ্জ, ব্রাশ ভাল করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। নোংরা বা ভেজা কাপড়, স্পঞ্জ ও ব্রাশের খুব তাড়াতাড়ি ব্যাক্টেরিয়ার সৃষ্টি হয়। পারলে প্রত্যেক কাজের জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করুন। কাপড়ের রং আলাদা হলে মনে রাখতে সুবিধে হবে। তা হলে এক জায়গার ময়লা আর এক জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে না।
রান্নাঘর মুছে নিন
রান্নাঘরের মেঝে ঝাড় দেওয়ার বদলে জলে ডিসইনফেকট্যান্ট নিয়ে শুকনো করে মুছে নিন। চটজলদি রান্নাঘর পরিষ্কার করতে ঝাঁট দেওয়া খুব সুবিধের ঠিকই, তবে তাতে ময়লা আরও ছড়িয়ে যেতে পারে। যেহেতু রান্নাঘরে সবসময় শুকনো ও ভেজা ময়লা থাকে তাই ভাল করে মুছে নেওয়া বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা ভাল।