লিপস্টিক লাগাতে ভীষণ ভালবাসেন। গত একবছরে কোভিডের পাল্লায় পড়ে বহু শখ আহ্লাদের জলাঞ্জলি দিয়েছেন। কিন্ত এই লিপস্টিকের মায়া ত্যাগ করতে পারেননি। বড্ড ভালবাসেন যে! তাই মাস্কের নীচেও সাজপোষাকের সঙ্গে মানানসই শেডটি পরে বেরোতে ভোলেননি। এদিকে আবহাওয়ার তারতম্য, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় আর্দতা হারাচ্ছে ঠোঁট। আজকাল প্রায়শই ঠোটের চারপাশ জ্বালা করে। খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায় ঠোঁট। কমেছে ঠোঁটের লাবণ্য। শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের চামড়া খুবই পাতলা ও সংবেদনশীল। তাই ঠোঁটের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। ঠোঁটকে আগের মতো সুন্দর করে তুলতে পরিচর্যার জন্য এই নিয়মগুলি মানলে উপকার পাবেন।
১. ঠোঁট ভীষণ শুষ্ক লাগলে কিংবা আর্দ্রতার চূড়ান্ত অভাব বোধ হলে জিভ দিয়ে চাটবেন না। স্যালাইভার কারণে সাময়িক স্বস্তি পেলেও কিন্তু বিশেষ কোনও লাভ হবে না। উল্টে ঠোঁটে আরও শুষ্ক করে দেবে। ঠোঁট ফাটার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে। তাই ঠোঁট অতিরিক্ত শুষ্ক লাগলে প্রচুর পরিমাণে জল ও অন্যান্য তরল পদার্থ খান। এতে শরীর ও ত্বকের হারানো আর্দ্রতা ফিরে আসবে। ঠোঁটেরও উপকার হবে।
২. ঠোঁটের পরিচর্যা খুবই সহজ। তাই প্রত্যেকদিন বাড়িতে তৈরি স্ক্রাব দিয়ে ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করুন বা মরা কোষ সরিয়ে ফেলুন। স্ক্রাব হিসেবে অল্প মধু ও চিনি মিশিয়ে ঠোঁটের মালিশ করুন। এক থেকে দু মিনিট ধরে ঠোঁট ঘষে নিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে ঠোঁটের চামড়ার মৃত কোষগুলি পরিষ্কার হবে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। ঠোট ভাল থাকবে।
৩. ঠোঁট নিয়মিত ময়শ্চরাইজ করুন। লিপস্টিকে ম্যাট শেড আপনার ভীষণ প্রিয়। এক্ষেত্রে ময়শ্চরাইজার যুক্ত ম্যাট লিপস্টিক বাছুন। ঠোঁট ভাল থাকবে। ময়শ্চরাইজার হিসেবে বাজার চলতি রাসায়নিক সামগ্রী ব্যবহার না করে নারকেল তেল বা ঘি ব্যবহার করতে পারেন। আর বাজার থেকে কেনা সামগ্রী ব্যবহার করলে কম উপকরণ ও রাসায়নিকে তৈরি লিপ বাম ব্যবহার করুন।
৪. এখন মাস্কের আড়ালেই থাকে ঠোঁট। তবে কোনও কারণে ঠোঁট রোদে পুড়লে বা কালো দাগ হলে, ঘরোয়া উপায়ে সমস্যার সমাধান করুন। বাজার থেকে রাসায়নিক সামগ্রীর বদলে লেবুর রসের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। এই মিশ্রণটি কালচে রঙ হাল্কা করবে। প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে লেবুর জুড়ি বেলা ভার। এবং নারকেল তেল খুব ভাল ময়শ্চরাইজ করে। তাই এই পরিচর্যায় আপনার ঠোঁটের উপকার হবে।
৫. ঠৌটের জন্য বিট খুবই উপকারী। ঠোঁটের লাবাণ্য ফিরিয়ে আনতে মধুর সঙ্গে বিটের রস মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি সারারাত ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। উপকার পাবেন। সকালে উঠে দেখবেন ঠোঁট আগের মতো নরম হয়ে গেছে। ঠোঁটের হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনবে এই বিট।
৬. ত্বকের থেকেও বেশি সংবেদনশীল ঠোঁট তাই সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মী থেকে ঠোঁট বাচাতে ব্যবহার করুন এসপিএফ যু্ক্ত লিপ বাম। বাড়ির বাইরে গেলে এই লিপ বাম ব্যবহার করুন।
৭. শুষ্ক ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাবেন না। পারলে ময়শ্চরাইজার লাগিয়ে তারপর লিপস্টিক লাগান।
৮. ওয়াটার প্রুফ লিপস্টিক অনেক সময়ে মুখ ধোয়ার পরেও ঠোঁটে থেকে যায়। এক্ষেত্রে ভাল করে ঠোঁট মুছে ঘুমোতে যান। মুখ কিংবা ঠোঁটের মেকআপ না তুলে ঘুমোতে যাবেন না।
এই নিয়মগুলি মেনে চললে দেখবেন মাস্ক পরে ঠোঁটের যে সমস্যগুলি হচ্ছিল তার থেকে অনেকটাই রেহাই পেয়েছেন। আর আবহাওয়া যতই শুষ্ক ও ঠান্ডা হোক না আপনার ঠোঁট সুন্দর ও আর্দ্র থাকবে।