শরীর ফিট রাখতে যেমন শরীরচর্চার প্রয়োজন ঠিক তেমনই ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে প্রয়োজন ফেস ওয়ার্কআউটের। বিশেষ করে শীতকালে, যখন শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠান্ডা ও রুক্ষ হাওয়ার দাপট সরাসরি পড়ে মুখের ওপর। এই সময় মুখের রক্ত সঞ্চালন ভাল করতে ভীষণ উপকারী এই ফেস ওয়ার্কআউট। এতে মুহূর্তে ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে আসে। যেমন মুখে মালিশ করা হয়। মুখে মালিশের ফলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। ত্বকের ভিতরের যে সমস্ত পুষ্টিগুলো ত্বকের ওপরের স্তরে পৌঁছতে পারে না সেগুলি সহজে পৌঁছে যায় মালিশের কারণে। সামান্য একটা মালিশ যদি ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল করতে পারে তাহলে ভেবে দেখুন ফেস ওয়ার্কআউট আপনার মুখের জেল্লা আরও কত গুন বাড়িয়ে তুলবে। বলিরেখা, কুচকানো চামড়া ও জৌলুসহীন ত্বকের সব সমস্যার সমাধান করে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। পুজোর আগে তাই ন্যাচারাল গ্লো পেতে এই তিনিটি ফেস ওয়ার্ক আউট শিখে নিন।
চোখের কোনের কোচকানো চামড়া ঠিক করবেন কীভাবে
রোদে পুড়ে হোক কিংবা অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম বা স্ট্রেসের কারণে, চোখের কোনের ওই সূক্ষ্ম রেখাগুলো এক ধাক্কায় অনেকটাই বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে আপনার। কীভাবে কমাবেন এই দাগ? হাতের বুড়ো আঙুল চোখের কোনে রাখুন। এবার মাথা না নড়িয়ে আসতে আসতে উপরের দিকে তাকান। এই তাকানোর সময়ে বুড়ো আঙুল দিয়ে আলতো করে ভিতরের দিকে চোখের দিকে চাপ দিন। এবার আসতে আসতে চোখের পাতা ফেলুন। এ ভাবে পাঁচবার করুন। প্রতিবার ১০ সেকেন্ডের মত সময় নিন। চোখ ভীষণ সংবেদনশীল তাই কোনওমতে চোখে বাড়তি চাপ দেবেন না। এই ওয়ার্ক আউটের ফলে চোখের রেখাগুলো মসৃণ হবে বাড়বে রক্ত সঞ্চালন।
চোয়ালের চামড়া টানটান করে নিন এই ভাবে
চোখের চামড়া মতই পরিচর্যার অভাবে গলা ও চোয়ালের চামড়াও কুচকে যায়। এক্ষেত্রে পীঠ সোজা রেখে খুতনি ওপরে তুলুন। এমনভাবে তুলবেন যেন গলা ও থুতনি একই লাইনে থাকে। এই অবস্থায় এবার খুব আসতে আসতে বাদিকে মাথা কাত করুন। এর ফলে আপনি গলায় হালকা একটা চাপ অনুভব করবেন। কয়েক সেকেন্ড এই ভাবে থেকে পাঁচ সেকেন্ড পর আবার মাথা আগের জায়গায় ফিরিয়ে এনে থুতনি নিচে নামিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিন। এবার একই ভাবে বাঁদিকের বদলে ডান দিকে মাথা কাত করুন। দুদিকে অন্তত তিন বার করে মোট ৬ বার এটা করুন।
ডার্ক সার্কেল সাড়িয়ে তুলুন এই ভাবে
শরীরের সব থেকে সংবেদনশীল চোখ আর মুখের সবথেকে সংবেদনশীল চোখের নীচের এই চামড়া। এখানে খুব সহজেই ডার্ক সার্কেল হয়। এবং এই অংশেই ফেস ওয়ার্ক আউট খুবই প্রয়োজনীয়। কীভাবে করবেন জেনে নিন। চোখের নীচের পাতায় আলতো করে আঙুল রাখুন। এবার ওপরের দিকে তাকান এবং আসতে আসতে নীচের পাতা ওপরে নিয়ে যান, এমনভাবে যাতে চোখ পুরোটা বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে পাঁচ সেকেন্ড চোখ বন্ধ রাখার পর স্বাভাবিক পোজিশনে ফিরে আসুন। ভাল ফল পেতে প্রত্যেক চোখের জন্য পাঁচ বার করে এই ওয়ার্ক আউট করুন।
ফেস ওয়ার্ক আউটের সময় এই বিশষগুলো অবশ্যই মেনে চলুন
মুখের এক্সারসাইজ বা মালিশের সময় সব সময় আপওয়ার্ড মোশনে করুন। ত্বকেক ওপর কখনই নীচের দিকে চাপ দেবেন না।
কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। তাই একদিনেই ফল পাবেন এই চিন্তা বৃথা। নিয়মিত ফেস ওয়ার্ক আউট করে চলুন ফল পাবেন। ত্বকের চামড়া কুচকানো বা পিগমেনটেশন থাকলে ফল পেতে একটু বেশি সময় লাগবে।
মুখের যে কোনও এক্সারসাইজ করার আগে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। এর জন্য যে কোনও মাইল্ড ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে হাল্কা ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এমন ময়শ্চারাইজার বাছুন যা আপনার ত্বকের রোমকূপের মুখ যেন বন্ধ না করে দেয়।