ওয়েব ডেস্ক: ঠান্ডা পানীয় (Cold Drinks) গলা জুড়ায়, শরীরে জমছে বিপদ! সতেজতার মোহে প্রতিদিন অজান্তেই ডাকছেন মারাত্মক রোগ। গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা পানীয় যতই আরাম দিক, এর ভিতর লুকিয়ে থাকা ক্ষতি একদিন শরীরকে দিতে পারে ভয়ংকর মূল্য।
গ্রীষ্মের দাবদাহে হোক কিংবা পার্টির আনন্দে, এক গ্লাস ঠান্ডা পানীয়ের চুমুকেই যেন ক্লান্তি মুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যায়। ঠান্ডা-মিষ্টি এই পানীয় শুধু গলা জুড়ায় না, মনকেও দেয় সাময়িক স্বস্তি। কিন্তু এই স্বাদ নেওয়ার আনন্দের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে নীরব শত্রু, যা ধীরে ধীরে শরীরের ভিতর গড়ে তুলছে অসুস্থতার আস্তানা।
আরও পড়ুন: গরমে চটজলদি বানিয়ে ফেলুন রকমারি Fruit Salad
একটি কোল্ড ড্রিঙ্কসের ছোট ক্যানেই লুকিয়ে থাকে প্রায় ৭ থেকে ১০ চামচ চিনি! এই অতিরিক্ত চিনি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিনের অভ্যাসে ঠান্ডা পানীয় আপনাকে ডায়াবেটিসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, হয়তো আপনি টেরও পাচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, এই পানীয়তে থাকা ফসফরিক অ্যাসিড শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়, ফলে ধীরে ধীরে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়স বাড়ার আগেই দেখা দিতে পারে জয়েন্টের ব্যথা, দুর্বলতা, এমনকি অস্টিওপোরোসিস।
ওজন কমানোর যতই চেষ্টা করুন, কোল্ড ড্রিঙ্কসের প্রতি ভালোবাসা কমাতে না পারলে সেই চেষ্টা বিফলে যাবে। কারণ অতিরিক্ত ক্যালোরি আর চিনি শরীরে জমা হতে শুরু করে চর্বি হিসেবে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে পেট আর কোমরের চারপাশে। ধীরে ধীরে তা আপনাকে স্থূলতার দিকেও ঠেলে দেয়। শুধু তাই নয়, এই পানীয় দাঁতেরও ক্ষতি করে। চিনি আর অ্যাসিডের সংমিশ্রণ দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দেয়, দাঁত হয়ে পড়ে দুর্বল আর সংবেদনশীল। গহ্বর, হলুদ ভাব আর মুখে দুর্গন্ধ হয়ে ওঠে নিত্যসঙ্গী।
তবে সবচেয়ে বড় বিপদ ঘটে লিভার আর হৃদয়ের ওপর। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, নিয়মিত ঠান্ডা পানীয় পানকারীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার আর হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। অতিরিক্ত চিনি, ক্যাফেইন আর কেমিক্যালের এই মিশ্রণ শরীরের কোলেস্টেরল স্তরও নষ্ট করে, ফলে শরীরে বাসা বাঁধে আরও বড় অসুখের সম্ভাবনা।
তাই শরীরকে ভালো রাখতে এখন থেকেই সাবধান হওয়া জরুরি। মাঝেমধ্যে স্বাদ নেওয়া ঠিক আছে, তবে পরিমিতি বোধই সবচেয়ে বড় বাঁচার উপায়। ঠান্ডা পানীয়ের বদলে বেছে নিন প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর পানীয়—নারকেল জল, বেলের শরবত, লেবু জল কিংবা বাটার মিল্ক। সতেজ থাকবেন, সুস্থ থাকবেন!
দেখুন আরও খবর: