ঘন, মজবুত, সুন্দর চুল চান না এ রকম মানুষ মেলা ভার। সে পুরুষই হোন কিংবা মহিলা, চুলের সমস্যায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য প্রত্যেকের। আর তাই চুলের পরিচর্যায় আমরা কেউই চেষ্টার ত্রুুটি রাখি না। হেয়ার স্পা, নামীদামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী, ঘরোয়া উপায়ে চুলের পরিচর্যা আরও কত কী! কিন্তু আপনি কি এটা জানেন, পুষ্টিতে যদি খামতি থেকে যায় সেক্ষেত্রে কোনও কিছুই কাজে দেবে না। তাই বাদবাকি কাজ আপনি যেমন করছেন করুন। সঙ্গে নিয়মিত সুষম আহার খান। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভিটামিন ও অন্যান্য নিউট্রিয়েন্টসের অভাবেও কিন্তু চুল পড়া বেড়ে যায়। তাই চুলের সৌন্দর্য্য ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি কী জেনে নিন।
ভিটামিন এ
জিনগত কারণ ও পরিবেশ দূষণের ফলে যেমন চুল পড়ে যায়, ঠিক তেমনি শরীরে ভিটামিন এ-র অভাব হলে চুল ঝরে পরে। ভিটামিন এ এক ধরনের সিবাম তৈরি করে যেটা চুলে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা জোগায় এবং চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। গাজর, কুমড়ো, পালং শাক, ডেয়ারি প্রোডাক্ট, ডিমে প্রচুর পরিমাণে এই ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এই খাবারগুলি আপনার নিত্যদিনের তালিকায় রাখলে উপকার পাবেন।
ভিটামিন বি
ভিটামিন বি বা বায়োটিনে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, এগুলি চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখেতে খুবই উপকারী। ভিটামিন বি চুলের পাশাপাশি ত্বক ও নখের স্বাস্থ্যও বজায় রাখে। শস্য, বিভিন্ন রকমের বাদাম যেমন চিনে বাদাম, আমন্ড, আখরোট এবং মাছ, মাংস, ফুলকপি, মাশরুম ও বেশ কিছু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি
আপনি কি লেবু জল খান? হ্যাঁ হলে খুব ভাল। পাতিলেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। তাই একগ্লাস লেবু জল যথেষ্ট। তবে যদি অ্যাসিডিটি বা অন্য কোনও সমস্যার কারণে লেবু জল আপনি খালি পেটে খেতে না-পারলে স্ট্রবেরি, পেয়ারা, আম, টমোটো, পেঁপে ও অন্যান্য যে কোনও ফল খেতে পারেন।
ভিটামিন ডি
অ্যালোপেশিয়া বা চুল পড়ার সমস্যা মূলত হয় ভিটামিন ডি-এর অভাবে। ভিটামিন ডি-র সবথেকে ভাল উৎস হল সূর্যের আলো। তবে সব সময় তা সম্ভব না হলে ফ্যাটি ফিশ, কড লিভার অয়েল, মাশরুম বা ডায়টারি সাপ্লিমেনট নিতে পারেন।
ভিটামিন ই
চুল লম্বা করতে ও চুলের স্বাস্থ্য ভাল করতে ভিটামিন ই দারুন কাজ করে। এই কারণে ভিটামিন ই যুক্ত তেল এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল মাথায় লাগানো হয়। এটা মাথায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। হেয়ার ফোলিকেলসের স্বাস্থ্য ভাল করে। চিনেবাদাম, পালং শাক, অলিভ অয়েল ও ব্রোকোলি খেলে ভিটামিন ই পাওয়া যাবে।
আপনার নিত্যদিনের খাদ্যে এই পুষ্টি থাকলে চুলের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। তবে চুল পড়া বন্ধ হবে না কিন্তু নিঃসন্দেহ চুলের গোড়া মজবুত হবে, চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি হবে। তবে পুষ্টিকর বা সুষম আহারের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনযাপনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।