কলকাতা: বাঙালি মাত্রেই ঘুরতে ভালবসেন। আর বেড়ানোর জায়গা বললেই বেশিরভাগেরই প্রথম পছন্দ পাহাড়। দার্জিলিং , কালিম্পং, মিরিক, গ্যাংটক থেকে শুরু করে আরও বেশি কিছু জায়গা প্রিয় পর্যটকদের কাছে। কিন্তু এখনও এমন কিছু ভার্জিন জায়গা রয়েছে সেগুলি সম্পর্কে খুব কম লোকই জানেন। এমনই একটি জায়গা হল ফুলবনে। পূর্বঘাট পর্বতমালার কোলে অবস্থিত ছোট্ট নেচার ক্যাম্প নিয়ে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রটি। অনেকেই এই জায়গাটিকে ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’ বলে থাকেন। এখানে গেলে মনে হবে, আপনি ঈশ্বরের নিজের দেশেই রয়েছেন।
কন্ধমল জেলার আগে নাম ছিল ফুলবনি। এখনও এখানে বাস কন্ধ বা স্কন্ধ আদিবাসীদের। এই ফুলবনির মূল আকর্ষণ পাকড়াঝোড় ও পুতুদি জলপ্রপাত। পাকড়াঝোড় ফুলবনি শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত। প্রায় ১০০টা সিঁড়ি ভেঙে নীচে নামতে হয়। পুতুদি জলপ্রপাতও জঙ্গলের মধ্যে, ফুলবনি থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। এমনকী পুতুদি যাওয়ার রাস্তাও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। পিল্লা সালকি নদীর ভূমিক্ষয়ের ফলেই এই জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও, ফুলবনি শহরের আশেপাশে পাকড়াঝোড় ও পুতুদি ছাড়া সেরকম দর্শনীয় স্থান নেই। কিন্তু আপনি যদি ফুলবনি থেকে দারিংবারির দিকে রওনা দেন, তাহলে দেখতে পাবেন সেই ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’। জায়গার নাম মন্দাসারু। ফুলবনি শহর থেকে ৮৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৫০০ ফুট উঁচু উপত্যকা। বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছে ঘেরা গোটা জঙ্গল। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে। তাদের ডাকেই ভোর হয় মন্দাসারুতে। আর শোনা যায় জলপ্রপাতের শব্দ। গ্রামের পূর্ব প্রান্তে উঁচু পাহাড়ের মাঝে শুকনো নদীখাত মন্দাসারু। জায়গাটা এতটাই নিস্তব্ধ যে, ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’ নামেই পরিচিতি পেয়েছে এই জায়গা।
দারিংবারি মন্দাসারু থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। দারিংবারি বেড়াতে গিয়ে অনেক মানুষই আসতেন এই নিস্তব্ধ উপত্যকায়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ ৯০০-১০০০ মানুষ ভিড় করেন এখানে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মন্দাসারুতে থাকার জায়গা ছিল না। তখন দিনের আলোতেই ঘুরে নিতে হত মন্দাসারু। তবে, এখন ওড়িশা পর্যটনের কটেজ রয়েছে মন্দাসারুতে। তাই রাত্রিযাপন কিংবা খাওয়া-দাওয়া নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই।
ফুলবনি ও মন্দাসারুর কাছের বড় রেল স্টেশন হল বেরহামপুর। দারিংবাড়ি যেতে গেলেও আপনাকে এই স্টেশনেই নামতে হবে। এখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নিতে পারেন ওড়িশার এসব পর্যটন কেন্দ্র।